OUR ADDRESS
Kolkata
Shyama Charan Dey St,
College Street, Kolkata,
West Bengal 700073
College Street, Kolkata,
West Bengal 700073
Email: hello@matribhasa.com
Phone: +91 9658986525
CONTACT US
Got a question or need a hand with anything on our website? Just reach out to our friendly support team!
Dipanwita Basu (verified owner) –
One of the books I have read. The intensity with which the writer takes me through the lives and beliefs of tribal people through his writing is praiseworthy. The link between Hindu tantric goddess Dhumadevi and buddist tantric goddess is remarkable.
Saubhik Sarkar (verified owner) –
কাউরীবুড়ির মন্দির
অভীক সরকার
দেব সাহিত্য কুটির
ওই একটা কথা। ওই একটা কথা পড়লেই ঠোঁটের কোণে হাসি আসে, আর মনে হয় ব্যাস, আর কোনো চিন্তা নেই, এবারে সব ঠিক হয়ে যাবে।
তারপর ভাবি, এই যে চিন্তা টা এলো মনে, এই যে এত কিছু বেঠিক হচ্ছে, সেটার কারণ তো লেখক স্বয়ং। তিনি লিখেছেনই এমন ভাবে যে গল্প যত এগিয়েছে, suspense এর পারদ ততো চড়েছে, ততোই বেড়েছে দুশ্চিন্তা।
কিন্তু আগের ৪ টে গল্পের মতোই আগমবাগীশ আছেন তার স্বমহিমায়, মুশকিল আসান করতে।
গল্প দেবী ধূমাবতী কে নিয়ে, গল্প এক আদিম জাতি কে নিয়ে, এই গল্প যৌন ঈর্ষার। এখানে এবং inquisition এর মতো সেই আদিম অভিশাপ নেই, খুব বেশি ইতিহাস কথন নেই, তন্ত্র মন্ত্রের কচকচানিও বেশি নেই, তবে গা হিম করা পরিবেশের বর্ণনা আছে, আছে চোখ লাল করা অভিশপ্ত কাকের দল, মাই কাউরীমানব ও আছে। আর আছে মন ভালো করা একটা ending।
একখান scene আছে গল্পে, যেখানে মন্দিরের বাইরে পূজারিণী মন্ত্র পড়ছেন, আর তাকে ঘিরে মন্ত্র পড়ছে নরকের কিছু জীব! কি বলবো, পুরো witch incantation দেখতে পেলাম যেন চোখের সামনে।
আগমবাগীশ এর নতুন adventure, পড়ে ফেলো চটপট.
Riju Ganguly (verified owner) –
বাংলা বইয়ের বাজারে এই মুহূর্তে ফগ নয়, তান্ত্রিক হররই চলছে৷ কিন্তু আসলে সেগুলোতে আমরা কী পাচ্ছি? অধিকাংশ লেখাতেই পাচ্ছি কিছু ধোঁয়াটে চরিত্র, বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস, যৌনতার যথেচ্ছাচার, আর প্রেত-পিশাচের গা-ঘিনঘিনে কারবার হিসেবে আটের দশকের ‘ইভিল ডেড’ সিরিজ থেকে শুরু তুলে আনা দৃশ্যাবলি।
তাতে না আছে তন্ত্র, না আছে হরর।
এখানেই অভীক সরকারের লেখার সার্থকতা। কেন জানেন? কারণ তাঁর লেখায় দু’টি উপাদানই থাকে একেবারে প্রাণবন্ত ও প্রোজ্জ্বল হয়ে— তন্ত্র ও হরর।
তন্ত্র কী?
দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে ঋগ্বেদে তন্ত্রের একমাত্র উল্লেখটিকে চিহ্নিত করেছেন। ১০.৭১.৮-এ “তন্বতে তন্ত্রম” এবং প্রাসঙ্গিক সূক্তগুলির সায়ণাচার্য-কৃত ভাষ্য অবলম্বন করে দেবীপ্রসাদ দেখিয়েছেন, তন্ত্র মানে “কৃষিলক্ষণম বিস্তারয়ন্তি কুর্বন্তি”— চাষবাস বা কৃষিকাজ। তিনি বলেছেন, কৃষি-কেন্দ্রিক যাদুবিশ্বাসের মধ্যেই তন্ত্রের বীজ নিহিত ছিল।
(“তন্ত্র-ভাবনা”, পরিচয়, আশ্বিন ১৩৬৫)
অর্থাৎ, প্রাণের উদ্ভব ও বিকাশ চেয়ে জাদুভাবনাই তন্ত্র।
আলোচ্য উপন্যাসে ঠিক সেটিই তো হয়েছে! মারণ, উচাটন, বশীকরণ প্রভৃতি ষড়যন্ত্রের যে প্রয়োগ এবং প্রাসঙ্গিক অভিচার এতে দেখানো হয়েছে, অন্তে তার লক্ষ্য তো থেকেছে একটিই— প্রজনন তথা কাম! ‘মেঘদূত’ আলোচনা প্রসঙ্গে শ্রদ্ধেয় রাজা ভট্টাচার্য একদা বলেছিলেন, প্রাচীন ভারতে কাম ও প্রেম সমার্থক ছিল৷ তাই আজ থেকে তিন দশক আগের উজনি অসমের পটভূমিতে রচিত এই উপন্যাসে যা ভালোবাসা, তাই অতীতে ছিল কাম, আর তার জন্য বিশ্বাসের সংঘাতই ছিল তন্ত্র! তাই এই উপন্যাসের নিঃশ্বাসে এবং বিশ্বাসে জড়িয়ে আছে তন্ত্র।
হরর কী?
অক্সফোর্ড-এর দ্বারা সমর্থিত সাইট লেক্সিকো বলছে, ওটি হল “অ্যান ইনটেন্স ফিলিং অফ ফিয়ার, শক, অর ডিসগাস্ট।”
আছে! ফেলুদার মতো টেলিপ্যাথির জোর না থাকলেও এই উপন্যাসের ডি.এন.এ-তে ডাবল হেলিক্সের মতো, বা শঙ্খ-লাগা সাপের মতো করে পরস্পরকে জড়িয়ে আছে প্রথম ও দ্বিতীয় রিপু। ঘৃণা, বিস্ময়াঘাত এবং ভয়— তিনটি অনুভূতিরই জন্ম দিয়েছে তারা সময়ে-সময়ে। সবচেয়ে বড়ো কথা, এই উপন্যাসের চরিত্রদের মধ্যে আগ্রাসন আর সমর্পণ— দুটি ভাবই অত্যন্ত শুদ্ধ ও অনাবিল হয়ে এসেছে। ফলে কাহিনি পরিণতির দিকে ধাবমান হওয়ামাত্র পাঠকের মনে সত্যিকারের ভয় দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
মাধুরী’র অকালমৃত্যুর ভয়।
তার দিদুনের সাধনা ব্যর্থ হওয়ার ভয়।
ভবতারণের ভালোবাসা হারানোর ভয়।
কাউরীবুড়ির অভিশাপ নতুন করে জেগে ওঠার ভয়।
গল্পটা শেষ হয়ে যাওয়ার ভয়!
কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ সিরিজ বলে যদি কিছু থেকে থাকে, তাহলে সেই ধারায় শ্রেষ্ঠ লেখা এটা। কেন জানেন? কারণ এই কাহিনিতে কৃষ্ণানন্দ সার্জেন হিসেবে তাঁর চরম দক্ষতাটি দেখিয়েছেন। এই উপন্যাসের লালসা, রিরংসা, জিঘাংসায় ভরা প্রান্তরে তিনি প্রকৃত ত্যাগীর মতো বিচরণ করেছেন। তাঁর আশীর্বাদ পেয়েছে প্রেমী, আর অভিশাপে দগ্ধ হয়েছে লোভী। ঘোরকৃষ্ণ শক্তির যথাযথ রক্তলাল ভৈরব হয়ে এসেছেন তিনি।
তাঁর মতো করেই বলি, “ভালো হোক। সবার ভালো হোক।”
আর পরের লেখাটাও আসুক— ধীরে-সুস্থে।
Shimanti Banerjee (verified owner) –
Had fun reading this. Fast paced and thrilling in portions it could have been a little more realistic. Interesting characters and a the return of a beloved hero makes things enjoyable. The writer is a good storyteller.
Parijat (verified owner) –
Kauriburir Mandir by Avik Sarkar
I keep myself away from the horror genre because I know the impact of terror that is bestowed upon me by horror stories. I can not help myself but think that the terror from those pages will emerge out to intensify and grasp my inner peace. However, I could not avoid reading this book as it was the BOTM with my buddy for April.
My Bengali friends may be well acquainted with Avik Sarkar’s name and writing style. I have been suggested his books many times by different people and I could not resist picking his book up this time. He has this perfect sense of inserting tantrism in horror and presenting a bone-chilling novel to the readers.
Bhabataran Chattopadhyay takes out this thrilling experience from his memory space upon the request of the lads of his area on a certain rainy night. Rare book collector Bhabataran sets off his journey in search of a special leaf that is only available in the jungle of Assam. There is a temple in the jungle where resides this special leaf which has the power to cure many diseases and can be used as an aphrodisiac as well. Unknown to the fact that no one has ever returned from the temple, locally known as Kauriburur Mandir, Bhabataran experiences a chain of events that leave him petrified.
The writing and the detailing will not only leave you baffled but also make your nights a bit scarier. I remember completing the book within three seatings, with the major reason being the crispy writing and well-maintained pace. The book was well edited. The read is perfect for a rainy weekend evening with your favorite snack. The climax, which was the main attraction of the book, was not that satisfying but it created the required ambiance.
Bengali literature has always been versatile. The past richness of Bengali literature has always made me worried about how the new generation authors will live up to the readers’ expectations. Some recent reads have made my belief stronger on the fact that Bengali literature will continue to shine. This book is certainly one of them.
Priyo (verified owner) –
Good
Titas (verified owner) –
এটা পড়ে মনে হল অভিক বাবু হটাৎ যেন ঠিক করেছিলেন “সবাই বলে আমার গপ্পোগুলো একরকম। আজ আমি অন্যদের মত লিখব।” সেই অন্য রকম লিখতে গিয়ে ছড়িয়ে কাক/লাট করেছেন।
পাড়ার চাটুজ্জে মশাই নিজের অল্প বয়সের গল্প বলতে লাগলেন ক্লাব ঘরের ছেলে ছোকরাদের কাছে। সে গল্পে ভূত, কাক, মানুষ, ভগবান সব এক হয়ে গেছে। সেখানে সেক্সের সময় ইয়ে বর্ধক ফুল (পরে যদিও সেটা লতা, পাপড়ি, আগাছা, তিমিমাছ – এই সবই হয়ে গেছে) খুঁজতে গিয়ে আসামের কাউড়িবুড়ির মন্দিরে গিয়ে ঢুকলেন।
বাড়ির পাশে নালার ওপাড়েই মন্দির, অথচ কেউ যায় না।
গেলে নাকি কাকে খায়, তবু হিরোর কিছু হয় না।
যাই হোক, ভাগ্যের দোহাই,
তাই হিরোর কাকুর বাড়িতেই অভিশাপ গজগজ করছে,
কাকুর বেয়াই বাড়িতেই অভিশাপের উত্তর রগরগ করছে।
কাকতালীয় লাগছে? তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই- এই বইতে যে মানুষ সেই কাক, যে কাক সেই নাগ। বস্তা বস্তা ভাটের মাঝে কাক তাল খাবে না তো আবার কী?
ঠাকুরের / বংশের / কুড়িয়ে পাওয়া অভিশাপ,
পুরোনো গল্প বলার জন্যে এক বুড়ো বা বুড়ি,
হিরোর ফ্যামিলির কেউ নেই গো,
কিন্তু ছেলে আমাদের ভালো,
টিপিন করতে বা চা খেতে গিয়ে আগমবাবুর আবির্ভাব,
এই নাও মাদুলি,
একসাথে দু-তিনটে জাতিস্মর বা ইতিহাসের রিপিট টেলিকাস্ট,
হিরোর চুলেও কিসসু হল না,
যাহ মাদুলি আর বাবাজি ভ্যানিশ,
– এই হল অভিক বাবু। নতুন বই এলে এই ফর্দর সাথে লাল পেন্সিল নিয়ে বসে মিলিয়ে নেবেন।
আর একটা জিনিসে আমার নিজস্ব প্রবল আ���ত্তি আছে। অভিক বাবুর প্রত্যেক গল্পে একটি স্যাম্পল তান্ত্রিক থাকে (আগমবাগীশ ছাড়াও অন্যান্য গল্প ধরে বলছি), যার আসা যাওয়া আমাদের অরণ্যদেবের মতো। কেন যে আসেন, কোথায় যে যান – কেউ জানে না। এর একমাত্র কারণ, লেখক এখনও যানেন না আগুম বাগুম কে নিয়ে তিনি আর কি কি করবেন।
লেখক গল্পের ভূমিকায় গোটা গোটা করে লিখে বসে আছেন যে – আগুমই এই গল্পে আগুন নিভিয়েছেন, তবু আগুম বাবু গল্পে ছদ্মনামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তান্ত্রিক বাবুর জানার শেষ নেই। সে সবই জানে সবই পারে। কখনই সে ভাবতে বসে মাথা চুলকায় না যে, “এটা তো আমার স্যার পড়ায় নি।” সে একসাথে icse, cbse, wbchse এবং জাপানের অব্দি সিলেবাস পড়ে বসে আছে। ভূতের iq বড়ো কম, নাহলে তার পরেও কেউ লাগতে আসে? যে মুহূর্তে বাবাজি, স্বামীজি, আগাজি, বাগাজি হাজির, সেই মুহূর্তেই গল্প শেষ। তার পরের পঞ্চাশ পাতা পরলেও যা, নিজের মতো ভাবলেও তা।
সব শেষে বলি, মণীশ বাবুর ধূমাবতী আমার চলনসই লেগেছিল। তাও তিনি না হয় নিজের মতো ঠাকুর পুজো করছিলেন। অভিক বাবুও দুম করে সেই একই ধূমাবতীর পুজোয় চাঁদা না দিলেই ভালো করতেন।
পুনঃ ষাট বছরের বয়স্ক কেউ তাঁর মৃতা স্ত্রীর অল্পবয়সের শরীরের বাংলা চটির মত রগরগে বিবরণ পাড়ার ছোকরাদের কাছে দেন কী করে?
প্র পুনঃ সত্যিকারের এক নমস্য সাধক আগমবাগীশের নামে বিনা দোষে এত কড়া গাঁজা ছড়ানোটা ঠিক নয়।
Madhurima Nayek (verified owner) –
জাস্ট অসাধারণ। ভিষষষণণণণণ ভালো লাগলো।দারুন তৃপ্তি পেয়েছি পড়ে। প্রচ্ছদটিও বেশ ইন্টারেস্টিং।আর হ্যা, অবশ্যই বইটা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য।
এটা মূলত কাউড়ী বুড়ির অর্থাৎ দশমমহাবিদ্যার একটি রূপ ধুমাবতী,তাঁকে নিয়েই গল্প, এক যৌন ঈর্ষার গল্প। গল্পের ছিটেফোঁটাও হিন্টস দিতে চাই না। নিজের পাঠ্য প্রতিক্রিয়া টুকুই জানাবো –
কাহিনী বেশ টানটান, কোথাও ঝুলে পড়েনি। বই থেকে চোখ ফেরানোর জো নেই।জঙ্গলের হাঁটা পথ, কাউড়ীবুড়ির অনুচরদের নিস্তব্ধ উপস্থিতি, তন্ত্রের উপাচার, মন্দিরের বিবরণ এত নিখুঁত দিয়েছেন যেন সব চোখের সামনে ছবির মতো ফুটে উঠছিল।কি বিভৎস সব রীতিনীতি, চমকে চমকে উঠছিলাম। আর হ্যা এখানেও বিপদের মুখে এসে দাঁড়িয়েছেন কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ।
হাতে পেলে অবশ্যই পড়ে ফেলুন, নাহলে অনেক কিছু মিস করে যাবেন।নিজের কালেকশনে রাখার মতো একটা বই।
Saiful Islam (verified owner) –
তন্ত্র-মন্ত্র শব্দটার প্রতি বরাবরই একতা দুর্বলতা রয়েছে। সেই দুর্বলতা থেকেই সকালে পড়া শুরু করেছিলাম বইটা। শেষ করলাম রাতে। আস্তে আস্তে পড়ার ধৈর্য হচ্ছিলোনা। খুবই ভালো লেগেছে পড়ে।
Sruti Misra (verified owner) –
বই: কাউরীবুড়ির মন্দির
লেখক: অভীক সরকার
মুদ্রিত মূল্য: ২১০/-
প্রকাশনা: দেব সাহিত্য কুটির
লেখকের সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয় সানডে সাসপেন্স -এর মাধ্যমে। সাধারণত আমার বিশেষ ভয় লাগে না আরশোলাকে ছাড়া। দিব্যি হরর মুভি দেখি, রাতে সানডে সাসপেন্স এ অনেক ভয়ের গল���পই শুনেছি। তবে যেদিন লেখকের গল্প শুনছিলাম, ভর দুপুরেই গা বেশ ছমছম করে উঠেছিলো। সেদিনই ঠিক করি, ওনার বই পড়তেই হবে। অবশেষে “কাউরীবুড়ির মন্দির” কিনে ফেললাম। ভূতের গল্পের বই পড়ার মজা পেতে হলে গভীর রাতই পারফেক্ট সময়। প্রায় তিনটে নাগাদ পড়া শুরু করি। কখন যে আমিও জঙ্গলের রাস্তায় হারিয়ে গেছিলাম, খেয়ালই করিনি। হঠাৎ দেখি জানলার বাইরে কাক ডেকে ওঠে, একসাথে দু তিনটে। ভোরের আলো ফুটবে ফুটবে করছে, রাতের অন্ধকারও কাটেনি। যারা বইটি পড়েছেন, তারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, ওই সময় যদি হঠাৎ করে কাকের ডাকটাই শুনি তাহলে কি অবস্থা হতে পারে। গল্পের ঘোরে এমনই ডুবে গিয়েছিলাম,এক মুহূর্তের জন্যে মনে হচ্ছিলো, যে জঙ্গলের ভেতর কোনো আওয়াজ পৌঁছতে পারে না, সেখানে গাছের ডালে বসে লাল চোখে তাকিয়ে থাকা কাকগুলোই যেন আমার ঘরের জানলার সামনে ভিড় করেছে। যাই হোক। আবার পরের দিন মাঝরাতে পড়া শুরু করলাম। বলা যেতে পারে, এক গোগ্রাসে গিলে শেষ করেছি।
লোভ, কাম মানুষকে ঠিক কতদূর নিয়ে যেতে পারে এই বইটা পড়লে বোঝা যায়। গল্পের মাঝপথে এসে আপনি হয়তো অনেক কিছুই প্রেডিক্ট করতে পেরে গেছেন বলে মনে হতে পারে। কিন্তু টুইস্ট গুলো বেশ ভালো, প্রেডিকশন ভুল প্রমাণিত করবে। শুরু থেকে শেষ অবধি গল্পটা ভীষণই এনগেজিং। তবে মাঝে মাঝেই অভীকবাবু “কোথায় যেনো নামটা শুনেছি মনে পড়ছে না” এই কথাটা নানা রকম ভাবে বারংবার চরিত্রকে দিয়ে বলিয়েছেন, তার ফলে কিছুটা একঘেঁয়ে লেগেছে। গল্প শেষ হওয়ার পর কিছু প্রশ্ন মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
১) ১৯৯০ সালে পুঁথি হাতে আসার পর ভবতারণ ওই সালেই গোলকপুষ্পের খোঁজে যান এবং মাধুরীর সাথে তার আলাপ হয়। এদিকে মাধুরীর হাজব্যান্ড ২০০৪ সালে মাধ্যমিক পাশ করেছেন। এটা কি করে সম্ভব?
২) পাতরগোঁয়্যাদের তন্ত্র সাধনা সবথেকে ভয়ঙ্কর এবং শক্তিশালী বলা হয়েছে। তবে মাধুরীর দিদা কিভাবে বারবার বিপদ থেকে বাঁচাতে সক্ষম হচ্ছিলেন?
প্রথমদিকে যে গতিতে এগোচ্ছিল, সেই তুলনায় গল্পটি যেন খুব তাড়াহুড়ো করেই শেষ হয়ে যায়। হ্যাঁ! ভয় লাগবে না ঠিকই, কিন্তু পড়ে ভীষণ ভালো লাগবে। একবারের জন্যেও বোর হবেন না
Dipanjan Das (verified owner) –
বইয়ের নাম: কাউরী বুড়ির মন্দির
লেখক: অভীক সরকার
প্রকাশক: দেব সাহিত্য কুটীর প্রা: লিমিটেড
মূল্য: ২০০/-
আলোচক: দীপাঞ্জন দাস
উত্তর আসামের প্রাচীন জনজাতির দেওরিদের একটি শাখা পাতরগোঁয়্যাদের হারিয়ে যাওয়ার ইতিহাস উঠে এসেছে এই বইয়ে। ছত্রে ছত্রে জায়গা পেয়েছে তাদের ভয়ঙ্কর ধর্মীয় আচার পালনের কথা। আগমবাগীশ সিরিজের গল্প হলেও এই লেখনীর সাথে আগের লেখনীগুলির মূলগত তফাৎ এটাই যে, এতে প্রাচীন অভিসম্পাতের কাহিনি বর্ণিত হয়নি। বরং যৌনঈর্ষা থেকে জন্ম নেওয়া অদ্ভুত ঘটনাবলীর বর্ণনা উঠে এসেছে এবং সেই বর্ণনার মূলে রয়েছে কাউরীবুড়ির মন্দির। ‘কাউরী’ শব্দের অর্থ কাক। কাকেদের মন্দির কথাটি শুনতে অদ্ভুত হলেও লেখক তা নিয়ে রচনা করেছেন একটি সুপাঠ্য কাহিনি।
ভবতারন চট্টোপাধ্যায় ওরফে চাটুজ্জ���মশাইয়ের জীবনের অভিজ্ঞতাই তিনি গল্পের আকারে শুনিয়েছেন বিশু, শিবু, ভজা ও গদাইদের। উদ্ধার হওয়া পুঁথি থেকে পাওয়া গোলকপুষ্পের খুঁজে ভট্টাচার্য্যবাবু পৌঁছান উত্তর আসামের তিনসুকিয়া তথা বেংমোরাতে। সদানন্দ বাবুর বাড়িতে উঠে চলতে থাকে তাঁর অন্বেষণ। সেখান থেকে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্ররূপে জায়গা নেন মাধুরী, অন্নপূর্ণা দেবী, মংকু, অনির্বাণ ও পরাগ বসুমাতারি। পাতরগোঁয়্যাদের অবলুপ্ত হওয়ার ইতিহাস ��ঠে এসেছে গল্পে। কে ছিলেন মগলহানজামা, চংদেওমাই, যার অদ্ভুত ক্ষমতার জেরে এই মহাসর্বনাশ উপস্থিত হয়। পাতরগোঁয়্যাদের বড়দেওরীই বা কে? কীভাবে সেই ভয়ঙ্কর সাধনার চোরাস্রোত বয়ে চলেছে গোপনে, তার সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে লেখনীতে। কে. এন. ভট্টাচার্য্য কীভাবে ভবতারণবাবু ও বাকিদের উদ্ধার করলেন তাও বেশ আগ্রহের সঞ্চার করবে বলেই মনে হয়। সকল ভয়ঙ্কর বিদ্যার মধ্যে লেখক প্রতিষ্ঠা করেছেন তার মত- “ভালোবাসাই হল সবচেয়ে বড় তন্ত্র, সবচেয়ে বড় জাদু।”, যা আমার বেশ ভালো লেগেছে।
Sweta Bose (verified owner) –
বীভৎস ভালো একটি বই। এই জঁরের অন্য বই গুলির থেকে অনেক আলাদা।
Ratnapurna Halder (verified owner) –
What a story…I haven’t read this kind of story before….what a thriller story is that…… tremendously 👍 what a description of nagjokkhini joggo….it’s called real tontro…..hat’s off to avik sarkar ❣️
Sayak Sarkar (verified owner) –
এই প্রথম অভিক বাবুর লেখা পড়লাম। এক্কেবারে গাঁজাখুরি 2 রুপিস গল্প। প্রথমটা আর মাঝের টা তাও একটু উত্তেজনা, টানটান একটা ভাব ছিল। শেষে এতটা cinematic করতে গিয়ে পুরো গ্যাঁজা টেনে লেখা শেষ করেছেন বলে মনে হলো, মানে এতটা না করলেই কি চলছিল না অভিকবাবু?
আর এই মন্ত্র তন্ত্র কালা জাদু আর নিতে পারছি না। বর্তমান বই এর বাজার টা পুরো ছেয়ে ফেলেছে এই নেশায়। আর তাতে এই বই একবার পড়বার পর কোথাও রেখে ভুলে গেলে যায় আসবে না।
Tiklu Ganguly (verified owner) –
very nice and interesting read. looking forward to reading other books of the author too
Nazrul Islam (verified owner) –
ওপার বাংলায় প্রচুর তন্ত্র ভিত্তিক বই বের হচ্ছে। কিন্তু হাইপ কিংবা মানের দিকে দিয়ে বেশিরভাগই সুযোগ্য না। এই বইটা ভালো লাগল বেশ। কাহিনী গুছানো। লেখা ভালো। বেশ গা শিউরানো ডার্ক একটা গল্প।
Ritam Debnath (verified owner) –
আসলে সত্যি বলতে কি, এই বইটি পড়ার আগে অনেকের থেকে রিভিউ পেয়েছিলাম, তাই পড়ার একটি বিশেষ আগ্রহ জন্মেছিল। আবার একটি ভয়ও ছিল মনের মধ্যে। কারণ বইটি থেকে একটা এক্সপেক্টেশন ছিল, আর বইটি সেই লিমিট অতিক্রম করতে পারবে কিনা সে নিয়ে দ্বিধা ছিল।
এই দ্বিধার মূলত কারণ হল এই যে, তন্ত্রসাধনার অনেক বই আছে যেগুলোতে তন্ত্রের কথা বলতে গিয়ে শেষে লেখক গল্পটাকেই ঘেঁটে ‘ঘ’ করে দিয়েছেন। তাই সেই গল্পের মধ্যে সাসপেন্স নামক জিনিসটার শ্রাদ্ধ হয়ে যায়। আরও যেটা পাওয়া যায় সেই বই গুলোর মধ্যে সেটা হল পেটের ভেতর থেকে অন্নপ্রাশনের ভাত তুলে আনার মতো অদ্ভুত রকমের বিবরণ।
যাই হোক, স্টারের সংখ্যা দেখে তো বোঝাই যাচ্ছে যে এই বইটি ওই উপরিউক্ত তালিকার মধ্যে পড়ে না। তার অনেক কারণ আছে,
একটা বই তখনই ভালো লাগে যখন গল্পটা জটিল হয়, কিন্তু একইসঙ্গে বোধগম্য হয়। এখানে বলে রাখা দরকার যে, অনেকে মনে করেন একটা বই খুবই ভালো কারণ সেই বইটির বিষয়বস্তু তার মগজে ঢোকেনি। এটা Nolan এর সিনেমার ক্ষেত্রে বলা যায়। কিন্তু সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এখানে লেখক যেভাবে প্লটটি তৈরি করেন এবং একটি মূল ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেসব আসে পাশের ঘটনার উল্লেখ করেন, আবার শেষে সেই উন্মুক্ত প্রশ্নের দরজাগুলোকে যেই দক্ষতার সঙ্গে বন্ধ করেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটি চ্যাপ্টারের শুরুতে সেইদিন ঘটা একটি বিশেষ ঘটনার উল্লেখ করে ফেলেন, যেটির সাথে তার আগের চ্যাপ্টারের শেষের মিল নেই। কিন্তু সেই অমিল ঘটনার বর্ণনা করতে করতেই আবার ফিরে আসেন পূর্ববতী চ্যাপ্টারের শেষের চিত্রে। এই অ্যাপ্রোচটি সত্যিই দারুন লেগেছে আমার।
আবার, চাটুজ্জে মশাই গল্প বলার মাঝে মাঝেই এমন একটা লাইন বলে দেন যে, সেটা জানার জন্য আপনাকে শেষ অবধি পড়তেই হবে। তাই আপনার ইন্টারেস্ট কখনই ক্ষীণ হয়ে আসবে না।
শেষে চাটুজ্জে মশাই নিজের স্ত্রী-এর কথা উল্লেখ করেন। আমিও মনে মনে চেয়েছিলাম যাতে এরকমই একটা ক্লাইম্যাক্স হয়। সেটাও হল। কিন্তু আমার নজর যেটা কেড়েছে সেটা হল, শুধুমাত্র পাঠকবর্গকে দু’পাতা বেশি পড়ানোর জন্য, বা তাদের বন্য চিন্তাভাবনাকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য বক্তার বিয়ে কিভাবে হল, কিভাবে তিনি কাকামশাই-এর কাছে প্রস্তাব রাখলেন সেসব উল্লেখ করেননি। গল্পের জন্য যেটুকু দরকার সেটুকুই বলে শেষ করে দিয়েছেন।
ব্যস্, এবারে ইতি।
আর একটি কথা বলা ভালো, আমি যেদিন বই শেষ করি সেদিন রেটিং দিই না। তাতে অনেকসময় সময় একটা তাড়না কাজ করে। সবে একটা জিনিষ পড়ে উঠলাম, খুবই ভালো লাগল, কিন্তু সেই সময় আগে পড়া বইগুলোর সাথে তুলনাটা মাথায় আসে না চট্ করে। ভালো বই সেটাই হবে যার রেশটা পড়ার পরেও কিছুদিন রয়ে যাবে। তাই সব মিলিয়ে বলা যায় যে, দিস্ বুক ইজ ওয়ার্থ আ শট্।
জয় হিন্দ।
Arpit Chowdhury (verified owner) –
শখের আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ভবতারণ চট্টোপাধ্যায়। স্ত্রী গত, আপাতত একাকী জীবনযাপন। এক বর্ষণমুখর রাতে পাড়ার আড্ডায় ছেলেপুলেদের অনুরোধে তুলে আনেন তাঁর যৌবনের এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। ‘কাউরীবুড়ির মন্দির’ মূলত ভবতারণ চ্যাটার্জীর এই স্মৃতিরোমন্থনেরই লিখিত রূপ।
আশ্চর্য এক ভেষজ গোলকপুষ্প। অতি কার্যকর, অতি দুষ্প্রাপ্য, অতি মূল্যবান। ঘটনাক্রমে এক পুঁথিতে এর হদিস পেয়ে যান ভবতারণ। যেতে হবে আসামের একদম পূর্বপ্রান্তে, তিনসুকিয়া জেলায়। রওনাও হয়ে যান, উঠে পড়েন পিতৃবন্ধু সদানন্দকাকুর বাসায়। সেখান থেকে ঘটনা দুভাগে ভাগ হয়ে চলতে থাকে সমান গতিতে। এক দিকে থাকে ভবতারণের গোলকপুষ্প খোঁজার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান, অপরদিকে গৃহস্থের একমাত্র কন্যা, সদ্যবিবাহিতা মাধুরীর দাম্পত্যজীবনের সমস্যা সমাধান। দুদিকেই পরপর অজস্র ব্যাখাতীত ঘটনা দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয���ে খেই হারিয়ে ফেলেন ভবতারণ। অতঃপর তাঁকেসহ সকলকে উদ্ধার করতে আবির্ভাব ঘটে অভীক সরকারের বহুল ব্যবহৃত বাস্তবযুগের চরিত্র, জগদ্বিখ্যাত তান্ত্রিক শ্রী কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের।
বইটির পরতে পরতে রয়েছে ঘাত প্রতিঘাত ভালোবাসা বিদ্বেষ আকাঙ্খা ঘৃণা। দেওরি জনজাতির হারিয়ে যাওয়া শাখা পাতরগোঁয়্যা, বিলের ধারে এক পরিত্যক্ত অন্ধকারাচ্ছন্ন মন্দির, বংশানুক্রমে মন্দিরে পূজা দিয়ে যাওয়া রহস্যময় নারী তান্ত্রিকের দল, মহাভারতে উল্লেখিত পাতাল নিবাসী নাগজাতি, আর দশ মহাবিদ্যার সপ্তম বিদ্যা কাক পরিবেষ্টিতা বিধবা দেবী ধূমাবতী – সব মিলিয়ে বইটি ধর্ম তন্ত্র আর রহস্যের পরিপূর্ণ এক মিশেল। এর পাশাপাশি মানবমনের দ্বন্দ্ব, সাংসারিক জটিলতা ও অন্ধকারে বেড়ে ওঠা অবৈধ সম্পর্ক তো আছেই, যাদের ওপর বইয়ের ভিত দাঁড়িয়েছে।
অভীক সরকারের লেখার হাত খুব ভালো। শেষদিকে বইয়ের পুরুষ ভিলেন মগলহানজামার আকষ্মিক আবির্ভাব ছাড়া বাদবাকি সবকিছুই বেশ চমৎকার লেগেছে। সিরিয়াসনেস বজায় ছিলো পুরোটা জুড়ে, লেখকও কোথাও অতিরিক্ত ভায়োলেন্স গিলাতে যাননি, বেশি বেশি ভয় পাওয়াতে যাননি। সবকিছু পরিমাপ মত।
দেবী মাতঙ্গীকে নিয়ে লেখা ‘ডামরী’র পর এটা দশ মহাবিদ্যাকে কেন্দ্র করে লেখা তাঁর দ্বিতীয় গ্রন্থ (সম্ভবত), এবার দেবী ধূমাবতী। এবং যথারীতি, পরিবেশনা বেশ চমৎকার, ভক্তিযুক্ত।
একটানা পড়ে শেষ করলাম দেড়শো পাতার বইটি। একটানা যখন পড়েছি, তখন বইয়ে রহস্য রোমাঞ্চ আর জ্ঞান সব যথাযথ ছিলো বলতেই হবে। রেটিং তাই ৫ এ ৫।
Tozammel Shishir (verified owner) –
আগম বাগীশ সিরিজের বই। হরর জনরার বই গুলা বাংলায় তেমন একটা জনপ্রিয় নয়।কেননা লেখকেরা অতিরিক্ত ভয় ভীতি, গা ছমছমে ভাব আনতে গিয়ে কি লিখতে কি লিখেন তা নিজেরাও জানেন না।অভীক সরকার বোধহয় এই জায়গাতেই ব্যতীক্রম।তন্ত্র মন্ত্র এর সাথে কিছুটা কাল্পনিক ইতিহাস মেশানোয় বেশ বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জন করতে পারে গল্পগুলো।হয়তো গায়ে কাটা দেবে না, আৎকে উঠবেন না কিন্তু বই ছেড়ে উঠতেও পারবেন না।গল্পের কাহিনী ধরে রাখবেই।তবে আগম বাগীশকে এতোটা ক্ষমতাশীল না বানলে গল্পের সাথে বাস্তবতা আরো খাপ খেয়ে যেতো।সব মিলিয়ে সুন্দর বই🖤
Foisal (verified owner) –
গল্পের শুরুটা বৈঠকি আমেজে আরম্ভ হয়ে, মাঝখানে গিয়ে কিছুটা একগেয়েমির দিকে মোড় নিচ্ছিল। গল্পের উত্তেজনাটা কেমন জানো মরে আসছিল। সেই মৃত্যপ্রায় গল্পটি জীবন ফিরে পায় ভবতারণ চট্টোপাধ্যায়ের কাকার আগমণে। এতটাই জীবনীশক্তি পেয়ে যায় যে, গল্পটা কিছুটা তাড়াহুড়ো করে অতি-নাটকীয়তার সাহায্য নিয়ে শেষ হয়ে যায়।
মোদ্দাকথা, ‘এবং ইনকুইজিশনে’ যেই অভীক সরকারকে পেয়েছিলাম, ‘কাউরীবুড়ির মন্দিরে’ সেই অভীক সরকারকে পাইনি
Sayak Sarkar (verified owner) –
���হুদিন পর এমন রুদ্ধশ্বাস, টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ভৌতিক গল্প পড়বার সৌভাগ্য হল । যৌন ঈর্ষাকে ভিত্তি করে এমন রোমাঞ্চকর ভূতের গল্প শরদিন্দুর “দেহান্তর” এর পর বোধহয় আর পড়িনি । যদিও এটা আসলে গল্প নয়, উপন্যাস আর “দেহান্তর”এর তুলনায় অনেক বেশি ডার্ক আর ভয়াবহ । আগাম সতর্কবাণী- এটি কিশোর পাঠকদের জন্য উপযুক্ত নয় । উপন্যাসে এমন কিছু দৃশ্যের বর্ণনা আছে যেগুলো শুধু ভয়ের নয়, রীতিমতো ডিস্টার্বিং (প্রাপ্তমনস্ক পাঠকের জন্যও) । ধর্ষণ, অজাচার, এবং নগ্নতার মত কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের বিষয় রয়েছে লেখাটিতে, অতএব দুর্বলচিত্তের পাঠক হলে বা এই ধরণের বিষয়ের প্রতি অরুচি থাকলে না পড়ার পরামর্শ দেব ।
তবে যারা মনে করেন ভৌতিক গল্পে এমন সব উপাদানের অবতারণা অযাচিত, তাঁদের জানাতে চাই যে এটা শিশু বা কিশোরপাঠ্য ভৌতিক গল্পের জন্য উপযুক্ত ফর্মুলা হতে পারে কিন্তু ভৌতিক গল্প মাত্রই সেটা শিশু বা কিশোরদের জন্য উপযুক্ত হতে হবে এমনটা দাবী করলে তাতে ভৌতিক কাহিনীর পোটেনশিয়াল ক্ষুণ্ণ হয় । মানবমনের অন্ধকার দিক নিয়ে এমন সব কাহিনী লেখা যায় যেগুলো চিরাচরিত অলৌকিক গল্পের চেয়ে বেশি ভয়াবহ ( প্রচেত গুপ্তের “বকুল” দ্রষ্টব্য) । ভয়ের গল্প লিখতে হলে তাই অলৌকিক, অপার্থিবের অবতারণা করাও নিতান্ত প্রয়োজনীয় নয় ।
সেভাবেই “কাউরীবুড়ির মন্দির”এর মূল ভয়ের জায়গাগুলো যত না অলৌকিক, তাঁর চাইতে বেশি লৌকিক । কাউরীবুড়ি, তাঁর অনুচর রক্তচক্ষু কাকেরা, গোলকপুষ্প, পাতরগোঁয়্যাদের উপর নেমে আসা ভয়াবহ অভিশাপ- এগুলো অলীক কল্পনার বেশি কিছু নয় । যথেষ্ট সাহসী ও যুক্তিবাদী মন হলে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক পাঠক এতে রোমাঞ্চের আস্বাদ পেতে পারেন বড়জোর (আমি নিজে যখন গল্পটা পড়ে শেষ করি তখন বাজছিলো রাত তিনটে; আলো নিভিয়ে সবে শুয়েছি, জানালার খুব কাছেই ক’টা কাক তারস্বরে চেঁচিয়ে উঠেছিল হঠাৎই । গল্পটা যারা পড়েছেন, তাঁরা সহজেই বুঝতে পারবেন এই ঘটনাটার তাৎপর্য কী । কিন্তু একটু রোমাঞ্চিত হওয়ার বেশি আমার আর কোনো উপলব্ধি হয়নি) । বরং আসল ভয়ের জায়গা হল সেগুলো যেখানে অলীক কল্পনা আর বাস্তব মিলে-মিশে যায়, যখন আর সেটাকে মনগড়া বলে উড়িয়ে দেওয়ার উপায় থাকে না । গল্পের অন্যতম চরিত্র মাধুরী যে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় সেটা আমার মতে উপন্যাসের সবচেয়ে ভয়ের অংশ । রক্তচক্ষু কাকরূপী প্রেত অবাস্তব হতে পারে কিন্তু ধর্ষকরা বাস্তব; যক্ষিনী অলীক কল্পনা হতে পারে কিন্তু যৌন ঈর্ষা অতি ভীষণ বাস্তব । এমন বাস্তবিক ভয়ের উপাদানকে সম্পূর্ণ বাদ দিয়�� ভৌতিক গল্প লেখার প্রয়াস কি অবাঞ্ছনীয় নয়?
ভূতের গল্প বা উপন্যাসের ক্ষেত্রে একটা ব্যাপার হল ক্লাইম্যাক্স ভয়ের হয় না; তাতে উত্তেজনা থাকে, থ্রিল থাকে কিন্তু ভয় থাকে না । ভয় থাকে ক্লাইম্যাক্সের আগের দমবন্ধকর পরিস্থিতিতে, ভয় থাকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিকতার মধ্যে অস্বাভাবিকতার এক ঝলক উপস্থিতিতে । আর ভয় থাকে পার্থিব-অপার্থিবের মিলনের মধ্যে যা চেনাকে করে তোলে অচেনা, জানাকে করে তোলে ���জানা । তাই যেকোনো ভালো ভূতের গল্পে ভয়ের জায়গা হয় ক্লাইম্যাক্সের আগে অবধি যা-যা ঘটে তার মধ্যে । ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছে গেলে সেটা তখন একটা থ্রিলার (মগলহাঞ্জামার প্রেত যখন গল্পের কথককে তাড়া করে আসছিলো বা জলের মধ্যে তাঁর পা টেনে ধরেছিলো সেই জায়গাগুলোতে পাঠকের কতটা ভয় লাগবে তা নিয়ে আমি সন্দিহান ) । “কাউরীবুড়ির মন্দির”ও তার ব্যতিক্রম নয় । চেনাকে আচমকা অচেনা করে তোলাতে লেখক যে পারদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন তাঁর লেখায় সেটাই পাঠকের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে ।
তবে অভীক সরকারের সব গল্পেই যেটা প্রত্যক্ষিত হয় তা হল অশুভ শক্তির শেষাবধি হার হয় কোনো কল্পিত তন্ত্র-মন্ত্রের দ্বারা নয়, বরং ভালোবাসার কাছে । যে কারণে কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ প্রতি গল্পেই তাঁর পাঠকদের মনে করিয়ে দিতে ভোলেন না- “ভালোবাসাই হল সবচেয়ে বড় তন্ত্র, সবচেয়ে বড় জাদু” । কথাটা যে তাৎপর্যপূর্ণ সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না । অতি করাল ভয়ের চেয়েও ভালোবাসার শক্তি বেশি । ভয়কে জয় করার উপায় আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই নিহিত আছে । ব্যাপারটা হয়তো একটু ক্লিশে, তবে লেখক সম্ভবত পাঠককে সম্পূর্ণ নৈরাশ্যে মগ্ন করতে চাননি । গল্পের কথক ভবতারণের মাধুরীর প্রতি জেগে ওঠা প্রেমকে তাই শেষাবধি সার্থকতা দিয়েছেন (যদিও পূর্বে মাধুরীর আয়ু আর মাত্র দু’দিন বলে গণনা করা হয়েছিল) ।
যাই হোক, একনিষ্ট ভূতের গল্পের ভক্ত হিসেবে আমি “কাউরীবুড়ির মন্দির”কে বেশ উঁচুতে স্থান দেব । যথেষ্ট গবেষণাসমৃদ্ধ লেখা সেটা পড়লেই বোঝা যায় । তার সাথে নিজের কল্পনা মিশিয়ে লেখক একটি অনন্য অকাল্ট/সাইকোলজিকাল হরর গল্পের জাল বুনেছেন । অদূর ভবিষ্যতে উনার আরো লেখা পড়বার আর পড়ে শিউরে ওঠার অনুভূতি পাঠকের সাথে ভাগ করে নেব এই আশায় রইলাম ।
Shuk Pakhi (verified owner) –
ভাল্লাগছে!
Protik Nag (verified owner) –
অভীক সরকার … বাংলা তান্ত্রিক হরর গল্পের “বেতাজ বাদশাহ”। এই লোক দুর্দান্ত গল্পবলিয়ে। গল্প বলার ভঙ্গিমায় মোটামুটি মানের গল্প দিয়েও নেশার মতো পাঠককে বুঁদ করে রাখতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার।
Sharmistha Mukherjee (verified owner) –
আপনার এই গল্পটি Horror Scope এ শুনলাম । অসাধারণ – অভাবনীয় – ক্ষুরধার লেখনী । 👌👌👌👌👌
Arif Raihan Opu (verified owner) –
আসলে আমি এর আগে “ধূমাবতীর মন্দির” বইটি পড়েছি। সেটা বেশ লেগছে। কিন্তু এটা শেষ করার পর মনে হচ্ছিল কি পড়লাম। শুধুমাত্র এক গাদা বর্ণনা আর ইতিহাসের কচকচানি ছাড়া গল্পে কিছুই ছিল না।
বইটিকে যারা ভালো বলছেন তাদের মধ্যে বেশির ভাগ লেখক রয়েছেন দেখলাম। তারা কোন টার্মে ভালো বলেছেন সেটার কিন্তু সেভাবে উল্লেখ নেই। শুধু মাত্র তারা পড়ে অথবা লেখকের মন রাখতে অযাচিত প্রসংশায় ভাসিয়ে দিয়েছেন।
বইটি আহামরি তেমন কিছু নয়।
Pritom Datta (verified owner) –
পুরো সময়টা মনোযোগ ধরে রাখার মতো গল্প।
তবে শেষের দিকে কাহিনীটা অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে।
বিশেষত, জঙ্গলে যাওয়ার পর কার কি হলো সেটা বিস্তারিত জানার আগ্রহটা থেকে যায়।
Partha Goswami (verified owner) –
জঘন্য ও কুসংস্কারপূর্ণ সব বিষয়ে অশ্লীলতা মিশিয়ে সস্তা রসের গল্প লিখে থাকেন ইনি, বাকিগুলির মতো এটিও তার একটি উদাহরণ, পয়সা দিয়ে এই বই কেনার কোনও মানেই হয় না…
Prapti Hiya Nag (verified owner) –
অসাধারণ!
Dhiman (verified owner) –
অনবদ্য
Shreya (verified owner) –
আহামরি না হলেও বেশ ভালো বই. প্রথম থেকে শেষ অবধি একটা suspense ছিল. কিছু জায়গা গাঁজাখুরি লেগেছে বলাবাহুল্য. শেষটুকু একটু সময় নিয়ে ভালো করে লিখলে better হতো. হুট্ করে শেষ করে দিয়েছেন লেখক, কেমন incomplete রয়ে গেল.
Ayushi Banerjee (verified owner) –
An unputdownable piece to me. Every inch of the book is full with suspense. Too good.
Foisal (verified owner) –
স্বাদ মন্দ নয়, তবে নুন কম !
তুলনামূলক ভাবে ‘এবং ইনকুইজিশনের’ থেকে একটু ভালো লেগেছে এই গল্পটি। বরাবরের মতনই ইতিহাস বেশ ভালো, তবে কাউরীবুড়ির কোনও রেফারেন্স পেলুম না কোথাও, হয়তো এটা ফিকশন। আর গল্পের থিমও আলাদা। কিন্তু অনির্বাণ আর তার দিদির উদ্ভট সম্পর্কের কারণ বুঝতে পারলাম না। যদি প্রজননই হয়ে থাকে তো সেই সন্তান কই? আর নিজের ভাইয়ের আহুতি দিয়ে সে কি চেয়েছিল সেটাও ঠিক বুঝলাম না। গতিময় গল্প। একদিনেই পড়ে শেষ করা যায়।