OUR ADDRESS
Kolkata
Shyama Charan Dey St,
College Street, Kolkata,
West Bengal 700073
College Street, Kolkata,
West Bengal 700073
Email: hello@matribhasa.com
Phone: +91 9658986525
CONTACT US
Got a question or need a hand with anything on our website? Just reach out to our friendly support team!
Riju Ganguly (verified owner) –
কল্পবিজ্ঞান ও রহস্যের সমন্বয়ে বাংলায় লেখালেখি খুব বেশি হয় না। তবু কেউ-কেউ সেই ধারাতেই নিজের মতো করে গল্প বলার চেষ্টা করে চলেন। তরুণ লেখক শোভন কাপুড়িয়া এই সময়ের বাংলায় সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিমান লেখকদের একজন। আলোচ্য বইটি তাঁর তেমন সাতটি লেখার সংকলন। এই লেখাগুলোকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়।
প্রথম ভাগে আছে চারটি স্ট্যান্ড-অ্যালোন গল্প। তারা হল~
১) দশ ঘণ্টা: ভবিষ্যতের পৃথিবীতে রাষ্ট্রের নিপীড়ন এবং প্রকৃতির তীব্র আক্রমণের সামনে নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে এক জনগোষ্ঠী। তাদেরই ক’জন মরিয়া চেষ্টা করল সেখান থেকে পালাতে। তারা কি সফল হল?
২) ৫৩১২২: পরিত্যক্ত রিসার্চ ল্যাবরেটরির কাছে পৌঁছোনোর পর কী ঘটছে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে নিয়োজিত গবেষকদের সঙ্গে?
৩) দ্রাঘাস: জনমানবশূন্য এক গ্রহ থেকে এসে পৌঁছোনো সংকেতে সারা দিয়ে সেখানে নামতে বাধ্য হল একটি মহাকাশযান। কোন রহস্য লুকিয়ে আছে এই গ্রহে, যেখান থেকে আজ অবধি কোনো দল ফিরে যায়নি?
৪) জি৫৫৬৭৮: স্মৃতিকে ০ আর ১-এ ভেঙে সুরক্ষিত রাখার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন মিশুক সামন্ত। তাঁর কাছে পুলিশ থেকে অনুরোধ এল এক নিহতের শেষ দিনের স্মৃতির করাপ্টেড ফাইলকে পড়ে দেওয়ার। কী পেলেন তিনি?
এরপর আছে পরস্পর যুক্ত দু’টি গল্প ও একটি উপন্যাসিকা দিয়ে তৈরি হওয়া ট্রিলজি। এতে আছে~
(৫) মুকুন্দপুরের জঙ্গলে: মানসিকভাবে ক্ষতবিক্ষত পুলিশ অফিসার সমরেশ বদলি হয়েছে মুকুন্দপুরে। সেই জঙ্গলে নাকি অদ্ভুত কিছু প্রাণীর দেখা মে��ে। আসলে কোন রহস্য লুকিয়ে আছে ওখানে?
(৬) ব্ল্যাক অর্ডার ম্যাট্রিক্স: একের পর এক মৃত্যুর অভিঘাতে নড়ে উঠেছে স্পেশাল রিসার্চ অ্যান্ড অপারেশন ডিপার্টমেন্ট। কে রয়েছে এর পেছনে?
(৭) সমরেশ ও স্যাম্পল ‘R-100’: ‘সেক্টর ৪১’ নামক একটি সংগঠন পরজীবীর মতো বেড়ে উঠেছিল জৈব অস্ত্র নিয়ে এদেশের নানা গবেষণা প্রকল্পের মধ্যেই। তারা এবার কোন সর্বনাশা পরিকল্পনায় মেতেছে? আত্মগ্লানিতে তলিয়ে যেতে থাকা সমরেশ কি পারবে তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হতে?
বইটা এককথায় রুদ্ধশ্বাস। কাল রাতে এটা পড়া শুরু করার পর একেবারে শেষ না করে থামতে পারিনি। তবে লেখার কয়েকটি জিনিস আমার কিঞ্চিৎ দৃষ্টিকটূ লাগল। সেগুলো হল~
১. প্রতিটি লেখায়, প্রায় প্রতিটি সংলাপেই অজস্র ও অকারণ ইংরেজি শব্দের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সংলাপ ছাড়া বিভিন্ন বর্ণনাতেও এ-জিনিস ঘটেছে, তবে কিছু কম। এমন সব ক্ষেত্রে ইংরেজি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে যেখানে তার বাংলাটি আদৌ দুরূহ বা অপ্রচলিত নয়। জানি না লেখক কেন এমন করেছেন। তবে বাংলায় লেখা কল্পগল্পে শুদ্ধ ও সহজ বাংলা ব্যবহার করাই কাঙ্ক্ষিত।
২. বারবার ‘ডিফর্মড মনস্টার’ বা ‘মনস্টার’ লেখা এবং তাদের আক্রমণের দৃশ্যগুলোর বর্ণনা বড়ো বেশি করে হলিউডি বি-মুভির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। এই জায়গাগুলোতে আরেকটু পেলব শব্দচয়ন এবং সাসপেন্স-নির্মাণ (যেমনটা শোভনেরই ‘আউটপোস্ট কেবি-১১’ বা ‘অন্ধকার চাঁদ’-এ আমরা পেয়েছি) বরং বেশি প্রভাবশালী হতে পারত।
প্রকাশক পলান্ন বিশেষভাবে ধন্যবাদার্হ হলেন এই বইটি প্রকাশ করে। এমন দামে এত হৃষ্টপুষ্ট একটি বইকে পরিষ্কার ও শুদ্ধ ছাপায় পরিবেশন যে কতটা কঠিন, তা জানি। তাঁরা এভাবেই পাঠকদের পাশে থাকুন।
লেখকের পরবর্তী রোমহর্ষক কল্পকাহিনি সংকলনের অপেক্ষায় রইলাম। হয়তো ‘সেক্টর ৪১’ এবং তার অভিশপ্ত ঐতিহ্য নিয়ে তাঁর গল্পমালার সমাপ্তি ঘটবে তাতে। হয়তো সমরেশ খুঁজে পাবে নিজস্ব কোনো স্বর্গ। সব পাঠকের মতো আমিও তার অপেক্ষায় রইলাম।