Posts

“ভোগ” এবং মাতঙ্গী দেবী

সুধী পাঠকবৃন্দ,

একটি বিষয়ে আপনাদের অবগত করানোর হেতু এই পোস্ট লিখছি। বিষয়টি জনৈক অভীক সরকার লিখিত “ভোগ” নামক একটি গল্প। কালকের একটি পোস্টে আমি গল্পটিকে “খাজা” বলে দাবী করি। কোনও লেখা বা কবিতা বা যেকোনও রচনা সম্পর্কে “খাজা” শব্দটির মত শব্দ প্রয়োগ করার পক্ষপাতী আমি নই। তবুও, শব্দটি পোস্ট থেকে ধার করি যাতে আপনাদের, অর্থাৎ যাঁরা নিজেদের পাঠক বলে দাবী করেন, পড়াশোনা করতে ভালবাসেন তাঁদের কাছে সঠিক তথ্যের গ্রহণযোগ্যতার তারতম্য কোনও বিশেষ একটি শব্দের ভিত্তিতে কতটা হতে পারে সেটা চাক্ষুষ করতে পারি। করেওছি। এই গ্রুপের জনৈকা সদস্যা আরোপ করেন যে আমি বিতর্ক সৃষ্টি করতে বাজে বকছি। এর পরবর্তীতে অ্যাডমিন মহাশয় পোস্টটির কমেন্ট সেকশন বন্ধ না করলে হয়তো এই পোস্টের অবতারণা হত না। যুক্তিসম্মত আর যোগ্য উত্তর সেই সদস্যাকে সেখানেই দেওয়া যেত। যাইহোক, একদিক থেকে ভালোই হয়েছে। এই পোস্টে আমি যাকে বলে “once and for all” দেখিয়ে দিতে পারব যে কোন “ভোগ” যে শুধুমাত্র ভিত্তিহীন তাই নয়, বরং বিভ্রান্তিকরও বটে। মূলত কোন জনপ্রিয় ব্যক্তির অনর্গল প্রলাপে (যাকে চলতি কথ্য বাংলায় বাজে বকাও বলা যেতে পারে) বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়ে থাকে। এই পোস্টে আমি প্রমাণ করব যে বাজে আসলে কে বকেছে।

মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে একটি বিষয় পরিষ্কার করে দেওয়া প্রয়োজন। আমি সাহিত্যের ছাত্র নই, না আমার সাহিত্য সম্পর্কে এত জ্ঞান আছে যে কোনও লেখা সাহিত্যমূল্যের পরিপ্রেক্ষিতে কতখানি যোগ্য বা অযোগ্য সেই বিচার আমার পক্ষে করা সম্ভব। তাই অভীক সরকার লেখক হিসেবে কতটা পরিণত বা অপরিণত সেই বিচার করা এই আলোচনার প্রতিপাদ্য বিষয় নয়। উপরন্তু, না আমরা সেই ইচ্ছে আছে, না আছে সেই অধিকার বা যোগ্যতা। আমার জ্ঞাত বিষয়ের পরিধির মধ্যে এটাও আমার অবগতিতে আছে যে সে তন্ত্রাশ্রিত লেখা ছাড়াও আরও নানারকম লেখা লিখেছে ও লিখে থাকে। সেই বিষয়ে করার মত কোনও মন্তব্য আমার কাছে নেই। কারণ, না আমার গোয়েন্দা জগতের সাথে কোন পরিচয় আছে, না আছে ঐতিহাসিক ঘটনাবলী সম্পর্কে নিজেকে ওয়াকিবহাল বলার মতো পড়াশোনা। তাই অভীক সরকার যাবতীয় লেখার মূল্যায়ন বা সর্বোপরি অভীক সরকারের লেখক হিসেবে মূল্যায়ন করা এই পোস্টের উদ্দেশ্য নয়, তা আশা করি স্পষ্ট করতে সক্ষম হয়েছি।

মূল বিষয়ে প্রবেশ করা যাক। বাংলায় তন্ত্রাশ্রিত লেখার কথা যে দুই জন লেখকের কথা সর্বাগ্রে মাথায় আসে তাঁরা হলেন স্বর্গীয় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় এবং তাঁর সুযোগ্য পুত্র স্বর্গীয় তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়। এঁদের তারানাথ তান্ত্রিক চরিত্রটি সর্বজনবিদিত। এঁদের লেখাগুলির কোনও কোনওটিতে সামান্য টেকনিক্যাল ভুলভ্রান্তি থাকলেও সেগুলি সুখপাঠ্য। কারণ তন্ত্র জগতের যে বিষয়গুলির সেখানে অবতারণা করা হয়েছে সেগুলির যথেষ্ট বাস্তব ভিত্তি আছে। এঁদের লেখা পড়লেই এটা অন্তত বোঝা যায় এঁরা কেউই ব্যক্তিগত জীবনে সাধক না হয়ে থাকলেও তন্ত্র সম্পর্কে অন্তত প্রাথমিক স্তরের পড়াশোনা এঁদের ছিল। আর ঠিক বিষয়টিই সরকারের গল্পগুলোতে দুর্লভ। যার কারণে গল্পগুলির চেহারা বাস্তব ভিত্তিহীনতার কঠিন রোগে ভোগা পুষ্টিহীন, শীর্ণকায়, মরণাপন্ন। অবশ্য এই মারণ রোগের শিকার বর্তমান সকল “তন্ত্র লেখকেরই”। এই যেমন কালই এই গ্রুপের এক বইয়ের বিজ্ঞাপনে দেখলাম বশীকরণকে অভিচার বলে দাবী করেছে লেখক। অর্থাৎ তার অভিচার আর আভিচারিক প্রয়োগ সম্পর্কে যে বিন্দুমাত্র ধারণাই নেই তাতে সন্দেহের অবকাশ থাকে না। ঠিক যে হলিউড অনেক সিনেমাকে বাস্তবতার লেন্সের নীচে ফেলে প্রকৃত এক্সপার্টরা তাঁদের মতামত রেখে থাকেন, সেভাবেই এই পোস্টে “ভোগ” গল্পটি ঠিক কীভাবে আর কোন কোন জায়গায় মায়ের ভোগে গেছে তা বোঝাবার প্রয়াস করা হবে। প্রয়াস এই কারণে যে এটা লেখার সময়ই আমি জানি যে প্রতিটি যুক্তি সাজিয়ে দেওয়ার পরও অশেষ গুণগ্রাহীরা গল্পের সেই দুর্বলতা স্বীকার তো করবেনই না, দেখতেও পাবেন না হয়তো।

“ভোগ” গল্পটি যাঁকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে তিনি হলেন মহাবিদ্যা মাতঙ্গী। প্রথমেই এই মহাবিদ্যাকে নিয়ে দুয়েকটি কথা বলা উচিত, মূলত দুটি কারণে। কারণ এক, গল্পটিতে মহামায়ার এই প্রকাশকে একটি কদর্য রূপ দান করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে, লেখকের বিবেক আর অজ্ঞতার ওপর যথেষ্ট আস্থা রেখে ধরেই নিলাম সেটা অনিচ্ছাকৃত। কিন্ত পাঠকসমাজে মারাত্মক ভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে আজকের দিনে। আর দুই, মাতঙ্গীর ব্যাপারে কিছু প্রয়োজনীয় বিষয়ে অনবগত থেকে গল্পটির কদর্যতার মূল রূপ অনুধাবন করা সম্ভব নয়।

মাতঙ্গী যে দশজন মহাবিদ্যাদের অন্যতম আর তাঁকে যে তান্ত্রিক সরস্বতী বলা হয়ে থাকে সেকথা আজ আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কালীকুল এবং শ্রীকুল এই দুই মূল সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রেই এই মহাবিদ্যা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও তান্ত্রিক সমাজে এমন একটি কথা প্রচলিত আছে যে কালী, তারা, ছিন্নমস্তা, ভৈরবী, ও ধূমাবতী মূলত কালীকুলের এবং ষোড়শী (ত্রিপুরা বা ত্রিপুরসুন্দরী), বগলামুখী, ভুবনেশ্বরী, কমলা (বা কমলাত্মিকা), ও মাতঙ্গী হলেন মূলত শ্রীকুলের উপাস্য দেবী। অর্দ্ধ কালীকুলের মত দুষ্প্রাপ্য, যদিও তারা আজকের দিনে মূলত দক্ষিণাচারী (দক্ষিণাচার ও বামাচার তন্ত্রের দুই মূল আচার, বামাচারেরই পরিণত রূপ কৌলাচার)। তন্ত্রের সামান্যতম সাধনা করতে গেলেই দীক্ষার প্রয়োজন সেকথাও অনেকেই জানে। এর মূল কারণ হল অধিকৃত হওয়া বা অধিকার লাভ করা। অধিকারহীন ব্যক্তির তন্ত্রোক্ত কোন সাধনা বা পূজারই অধিকার নেই। এমনকী অধিকারবিহীন সাধনা বা উপাসনাকে স্বয়ং মহাদেব অভিচার বলে দাবী করেছেন (কোথায় বলেছেন জানতে চাইলে কমেন্ট করবেন, বলে দেব)। যাইহোক, এবার তাহলে প্রশ্ন হতে পারে, শাক্তাভিষেক (তন্ত্র জগতের প্রবেশমূলক প্রথম দীক্ষা) নিলেই কি কেউ মাতঙ্গী সাধনার অধিকারী হয়ে যায়? উত্তর হল, যায় না। মাতঙ্গী যেহেতু মহাবিদ্যা, তাই কোন সাধক তাঁর সাধনার অধিকার পায় ক্রম দীক্ষার পর। প্রাথমিক দীক্ষার পর গুরুপ্রাপ্ত মন্ত্রের যথাযথ পুরশ্চরণ, পরবর্তীতে পূর্ণাভিষেক, এবং তারও পরবর্তীতে কালী ও তারার মন্ত্র পুরশ্চরণ ও রহস্য পুরশ্চরণান্তে ক্রম দীক্ষা। এই ক্রম দীক্ষার পর গুরু উপযুক্ত বুঝলে তবেই মাতঙ্গী সাধনা দেন। অধিকার ব্যতীত যেমন কোন সাধকের মাতঙ্গী সাধনার কোন প্রশ্নই ওঠে না, তেমনই মাতঙ্গীরও একজন অদীক্ষিত ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ স্থাপনের অধিকার নেই, যার সাত পুরুষেও কেউ বোধহয় আসন ধরে ঘন্টাখানেকও মন্ত্রজপটুকুও করেনি। ঠিকই পড়লেন, মাতঙ্গীরও সেই অধিকার নেই।

গৃহী ব্যক্তিদের সাথে সাধারণভাবে মাতঙ্গীর কোন যোগাযোগ নেই। মাতঙ্গী সাধনা গৃহী সাধকদের নয়ও, মায়ের পূজাও গৃহে করা নিষেধ। কেন? তাহলে কিছু টেকনিক্যাল বিষয়ে ঢুকতে হয়। ক্রম দীক্ষার পরে গুরু যখন মাতঙ্গী মন্ত্র দান করেন, তার পরে সেই মন্ত্রের ঠিক আগের মতই পুরশ্চরণ করতে নয়। কিন্তু এই পুরশ্চরণ সাধারণ নয়, এ হল রহস্য পুরশ্চরণ। রহস্য পুরশ্চরণের সম্পূর্ণ পদ্ধতি অত্যন্ত গোপনীয় ও একমাত্র গুরুমুখনিঃসৃত হলেই তবেই তার ফললাভ হয়, এমনকী এই রহস্য পুরশ্চরণে গুরুকে উপস্থিত থেকে কিছু কাজ সাধককে দিয়ে করিয়ে নিতে হয়। তবে সেসব গুহ্য বিষয়। এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করার মূল কারণে ঢুকি। মাতঙ্গীর রহস্য পুরশ্চরণে দুটি পূর্ণ নরকরোটির প্রয়োজন হয়। পুরশ্চরণকালে সাধক মন্ত্রজপের সময় তাঁর দুই কোলে এই দুই করোটিকে রেখে জপ চালিয়ে যান। এর কিছু গূঢ় ব্যাখ্যা আছে, যা সর্বসমক্ষে প্রকাশ্য নয়। এখন তন্ত্রে কোন দ্রব্য শোধিত, অভিমন্ত্রিত, আর জাগৃত না করে ব্যবহার্য নয়। রহস্য পুরশ্চরণের পূর্বে যখন এই নরকরোটি দুটি একটি বিশেষ পদ্ধতিতে “জাগানো” হয় তখন তাতে দুটি প্রেতের অবস্থান হয়। এই দুটি প্রেত যার খুলি তারাই। এই জাগ্রত করোটিকে গৃহে রাখা যায় না। এমনকী কপাল সাধনের (যে সাধনায় সিদ্ধিলাভে সাধক কাপালিক হন) ক্ষেত্রেও জাগ্রত মহাপাত্র গৃহে রাখা নিষেধ। তাই মাতঙ্গী সাধনা গৃহী সাধকের কর্ম নয়, সাধারণ গৃহীর তো প্রশ্নই ওঠে না। সেই দিক থেকেও মাতঙ্গীর সেই ছেলেটিকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে ভোগ চাওয়ার কোন ভিত্তি থাকতে পারে না।

বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠা একটি সাধারণ বিষয়। যাঁরাই পূজা অর্চনার সাথে যুক্ত তাঁরাই এই ব্যাপারে অবগত। প্রাণপ্রতিষ্ঠার একটি সাধারণ নিয়ম হল যদি কোন প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা বিগ্রহকে পরপর তিনদিন পূজা বা ভোগ নিবেদন না করা হয় তবে সেই বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠা নষ্ট হয়ে যায়, পুনরায় প্রাণপ্রতিষ্ঠার প্রয়োজন হয়। জমিদার বাড়িতে আমি যদি ধরেই নিই পুজো হত, দীর্ঘদিন তা বন্ধ ছিল, আর সেই বিগ্রহ কলকাতায় অ্যান্টিক শপে চলে আসার পর তো আর পূজাপাঠের গল্পই নেই। তাহলে মা যখন সেই ছেলেটিকে স্বপ্ন দিলেন, ভোগ চাইলেন, তাকে প্রাণপ্রতিষ্ঠার পদ্ধতি, ভোগ নিবেদনের পদ্ধতি, নিত্য পূজার পদ্ধতি এগুলো বলে দিলেন না! নিদেনপক্ষে এমন কারুর সন্ধান দিতে পারতেন যিনি এইসব বিষয়ে অবগত। তারপর যখন সেই ছেলেটি ভোগ দেওয়া শুরু করল তখন তার পেছনে ডামরী লেলিয়ে দিলেন! মানে দেবীর কি কোন কাণ্ডজ্ঞান নেই! এই কারণেই গল্পটি একটি ভাটের গল্প। একজন মহাবিদ্যাকে এইভাবে খেলো করে উপস্থাপন করার পেছনে অভীকের অজ্ঞতা কাজ করেছে না অন্য কিছু সেটা ওই বলতে পারবে।
সবশেষে সেই বিষয়টি যা সোজা বাংলায় “পাবলিক খেয়েছে সবচেয়ে বেশি”। সেটা হল দেবীকে উচ্ছিষ্ট (অর্থাৎ এঁটো কাটা) ভোগ দেওয়া। এখানেও অজ্ঞতা ও স্বভাবগত মূঢ়তার পরিচয় পাওয়া গেছে। মাতঙ্গীর বেশ কিছু রূপ আছে, যেমন রাজমাতঙ্গী, কর্ণমাতঙ্গী, বশ্যমাতঙ্গী ইত্যাদি। উচ্ছিষ্ট চন্ডালিনী মাতঙ্গীর একটি রূপ হলেও তিনি নিজে মা মাতঙ্গী নন। শ্রীকুলে মাতঙ্গীকে ত্রিপুরার প্রধানমন্ত্রী বলা হয়। স্বয়ং পরাবিদ্যার স্বরূপ এই দেবীর সাথে উচ্ছিষ্টের কোন যোগাযোগ নেই। মাদুরাইয়ে মীনাক্ষী দেবীর মন্দির আছে, ইনি আসলে মা মাতঙ্গীই। আমার তো মনে হয় এই সরকারের কোন তরুণ পাঠক এই তথ্য জানতে পারলে সেই মন্দিরে মায়ের দর্শন করতে গিয়ে ভুলবশতঃ তাঁকে এঁটো কাটা ভোগ দেওয়ার কথা না বলে ফেলে। ওদিককার লোকজন একটু অনুভূতিপ্রবণ তো, কপালে গাত্রসেবা জুটে যাওয়াও অসম্ভব নয়। আর উচ্ছিষ্ট চন্ডালিনীর ক্ষেত্রে এঁটো ভোগ দেওয়ার বিধান থাকলেও তা কেবলমাত্র দীক্ষিত অধিকৃত সাধকেরই এঁটো, অন্য কারুর নয়। না জেনে আজেবাজে তথ্য উপস্থাপন করা সস্তা বাজারিকরণের অপপ্রয়াস ছাড়া আর কিছুই নয়।

বি. দ্র.: এই গল্পেই পূজ্যপাদ শ্রী কৃষানন্দ আগমবাগীশকে নিয়েও ছেলেখেলার কোন ত্রুটি রাখা হয়নি। অভীক সরকারের এই মহান সাধককে নিয়ে বাচালতার প্রমাণ অন্য পোস্টে দেব। আপাতত এইটুকু কতদিনে হজম হয় দেখা যাক। তন্ত্রের প্রকৃত স্বরূপে কালিমালেপনের অপচেষ্টাকে রুখে দিতে মা আমাদের সকলকে আশীর্বাদ করুন।

ব-কারে বারুণীদেবী গ-কারে সিদ্ধিস্মৃতা |
সর্বপত্তারিণী দেবী মাতঙ্গী করুণাময়ী ||

টাইপজনিত ভুলত্রুটি মার্জনীয়।

author-avatar

About উমানন্দ তীর্থনাথ

🌺 কামদা কামিনী কাম্যা কামানিয়স্বভাবনী | কস্তুরীরসালিপ্তাঙ্গী কুঞ্জরেশ্বরগামিনী || 🌺

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *