অমিতাভ নাগের এক ডজন গল্পের সংকলন।
অমিতাভ লেখালেখির জগতে নতুন, তার লেখাও, সেই অর্থে বেশ নতুনই। সে গল্প লিখেছে। কেন লিখেছে গল্প? রোজ তো কত কত গল্প লেখা হয়ে চলেছে, এমনকি আমাদের ভাষাতেও। ছাপাও হচ্ছে সেসব, ছোট-বড়-মাঝারি কাগজে। পড়েও ফেলছি আমরা। আর সেসব গল্পের মধ্যে, দু’একখানা গল্প ছাড়া মনেও থাকছে না বোধহয়। এখানে প্রশ্ন ওঠে, কেন মনে থাকছে না? দিব্যি ঝরঝরে বাংলায় লেখা গদ্য ভুলে যেতে খুব বেশি সময় লাগছে না কেন? আমার মতো সাধারণ পাঠকের কাছে এর একটা উত্তর এইরকম – নতুন কিছু লেখা না হলে আর মনে রাখা সম্ভব নয়। বাংলা ভাষার সম্পদ তার ঐতিহ্য, তার যুগোত্তীর্ণ রচনাধারা। লেখালেখির এই বিস্তীর্ণ সময়কালে বাংলায় এমন এমন সমস্ত লেখা, গদ্য আমরা পেয়েছি যে, তাদের ভুলে যাওয়ার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। তাই সময় যত এগিয়েছে, বাঙালি পাঠকের মনে তত বেশি করে স্মরণযোগ্য লেখা জমা পড়েছে। সাধারণ পাঠকের মনে কতটুকুই বা জায়গা। তাই আজ, এই ২০১৩ সালে, খুব নতুন কিছু লেখা না হলে সে ভুলে যেতেই পারে, দোষ দেওয়া যাবে না তাকে। এই জায়গা থেকে অমিতাভর চেষ্টাকে স্বাগত জানানো যেতেই পারে, কারণ সে নতুনভাবে লেখার চেষ্টা করেছে। ইদানীং ‘নতুন’ শব্দটাও বড্ড পুরনো মনে হয়, তাই কেমন নতুন, কী কারণে এবং কোথায় নতুন, তা জানতে হলে পাঠককে অমিতাভর এসব লেখা পড়ে ফেলতে হবে। এর বেশি ট্রেলারে দেখানো যায় না। এখানে প্রশ্ন উঠতেই পারে এবং আমি নিশ্চিত উঠবেই – এত লোক থাকতে বাংলায় নতুন একটি গদ্যের ভূমিকা খামোখা আমাকে লিখতে বলা কেন? আমি বিগত কয়েক বছর ধরে কবিতা লেখার একটা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, এখনও ভেঙে পড়িনি। আমার কি অধিকার আছে গদ্যের বই নিয়ে একখানা ভূমিকা লিখে ফেলবার? আমি মনে করি নেই। তবে লেখাগুলো পড়েছি যখন, আমি একজন পাঠক তো বটেই। সেই অধিকারেই আমার মতামত জানালাম, যেটা ভূমিকা হিসেবে ছাপা হচ্ছে মাত্র। আর হ্যাঁ, আমার এই নগণ্য মতামতের সঙ্গে আপনাদের ধারণা মিলে গেলে আর কী, খুশিই হব।
শ্রীজাত
Reviews
Clear filtersThere are no reviews yet.