বিশু চাঁড়ালের থান – কর্ণ শীল || Bishu Chandaler Than – Karna Sheel

পরিত্যক্ত বাড়ির যে সব লক্ষণ দেখা যায়, যেমন পশুবিষ্ঠা, কাঠকুটো…তেমন কিছুই নেই। শুধুমাত্র অনেক সাদা আর একটা দুটো কালো রঙের পাখির পালক দেখা যায় ইতিউতি। বাড়ির ভিতরটা আরও অদ্ভুত। পুরো বাড়িটাই একটা# মাত্র প্রশস্ত ঘর দিয়ে তৈরি। উজ্জ্বল ঝকঝকে পাথরের দেওয়াল, দেওয়ালের গায়ে পাথর কেটে বানানো অদ্ভুত সুন্দর সব ছবি। আমি প্রলয়কে বললাম, ‘বেরিয়ে চল প্রলয়’।

আমার ভালো লাগছিল না। বাংলা বিহার সীমান্তের এই অরণ্য দেহাতে এমন কালো পাথরের বাড়ি, তার দেওয়ালে গ্রীকো -রোমান চিত্রকলা, আমার মনে এক অদ্ভুত ছ্যাঁকছেঁকে অস্বস্তির জন্ম দিচ্ছিল প্রতি মুহুর্তে। আমার কথা শুনে প্রলয় মোহাবিষ্ট গলায় বললো, ‘কেন? বেশ লাগছে তো রে! বেশ ঝকঝকে তকতকে ঘর, এমন সব ছবি। রাতে তো এখানে এসেই থাকা যায় রে’।

আমার শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হয়ে আসছিল। আমি প্রলয়ের কাঁধের কাছটা খামচে ধরে বললাম, ‘না যায় না। তা হলে কি এতদিন ঘরটা ফাঁকা পড়ে থাকত? দেহাতিরা না হয় ভয়ে আসে না, আমাদের মতো পিকনিকাররাও তো আসত। প্লাস্টিক, কাগজের কাপ, নোংরা ছড়িতে থাকত এখানে ওখানে। এ আমাদের জন্য নয় প্রলয়, চল এখনই’।

প্রলয়ের কাঁধ ধরে টানতেই বুঝলাম এই সুযোগটার অপেক্ষা প্রলয় করছিল। আমার ডান পাঁজরে একটা মোক্ষম ঘুষি মারলো সে। মুহুর্তের জন্য চোখটা অন্ধকার হয়ে গেল। শুনলাম হিসহিস করে সে বলছে, ‘শালা গায়ে হাত দিচ্ছিস কাকে বে? বহুত নখরা সহ্য করেছি তোর, আর না?’

কাদের তৈরি এ আশ্চর্য আবাস? কেন কথককে হঠাৎ আঘাত করলো প্রলয় জানার জন্য পড়তে হবে কর্ণ শীল বিরচিত ‘ঝরকেতকীর তীরে ‘ গল্প, সাকিন “বিশু চাঁড়ালের থান ” গ্রন্থ।