মাধুকরী
‘শূন্য করতল বিনা অন্য কোনও ভিক্ষাপাত্র নেই’— এই বলে
অনির্বচনীয় দাঁড়িয়েছে এসে এক আশ্চর্য কাঙাল
জ্যোৎস্নার অন্ধকারে আমার আঙিনায় এসে দাঁড়িয়েছে।
আমি কি অন্নদা তবে?
আজীবন খোলা মুঠি শূন্য সঞ্চয়
তাকে নিয়ে এ তোমার কেমন পরিহাস প্রভু
অনঙ্গ অন্ধকারে যাবতীয় বস্তুনিচয়
বয়ে চলে গেছে আঙুলের ফাঁক বেয়ে—
সেও কি অন্নদা হবে?
এই দীন কররেখা ভিক্ষাপাত্রে রাখি— সসংকোচ,
অন্ধবালিকার স্পর্শের মতো ধীরলয়।
কাঙালের রিক্ত করতল অন্নদার একান্ত আশ্রয়।
ধান কাটার পরে
আমার কোথাও যাওয়ার নেই। তাই আমি
যত্ন করে গুছিয়ে রাখি নিমরাজি স্যুটকেস
সুগার ও প্রেশারের ওষুধ, বিবর্ণ শিউলির রেশ
প্রচ্ছন্ন কাজললতা কালো কারে ঘুনসির ঢ্যালা, বেনামী
ঘামের নুন সাদামাটা— এইসব অবান্তর যাপন
বাক্সের খাঁজে খোঁজে এদিক ওদিক
সাজিয়ে রাখি, আমার কোথাও যাওয়ার নেই।
‘নবেন্দু! নবেন্দু!’ হেঁকে তবু বয়ে যাবে হাউড় বাতাস সেই
অশ্বত্থের শিকড় নষ্টামি করে তথাপি আটকে রাখে, প্রান্তিক
নোনাধরা ইঁট একসাথে— ছেড়ে দিলে এমন কি ক্ষতি?
টেমির শিখায় ওড়ে ছাই, বাদলা পোকার দল নাতিপুতি
সহ বলে যায়— ‘আমরাও সংসারী!’— আমি কি পারি
তাদের সাথে পাল্লা দিতে? আমার কোথাও যাওয়ার নেই।
চড়ুইয়ের বাসার কুটো, স্বাবলম্বী উড়ে যাওয়া ছানা
ফেলে গেছে খোলা ভাঙা ডিম— সেইসব তুলে রাখি হাঁটকে বিছানা
বাক্সে গোছাব বলে। আমার কোথাও যাওয়ার নেই।
Reviews
Clear filtersThere are no reviews yet.