Ichchaputul (ইচ্ছাপুতুল) || Niharul Islam

125.00

Estimated delivery on 15 - 22 April, 2025
141 People watching this product now!
Category:
Description

একদিন আব্দুল ফকিরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার পথে হঠাৎ আসাদ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ওসমানকে বলল, ‘ভাই আমি একবার ভাবিতে গমন করতে চাই।’
ওসমান ভেতর ভেতর চমকে উঠলেও কিছু না বোঝার ভান করে জিজ্ঞেস করল, ‘কী বললি?’
একই ভঙ্গিতে আসাদ আবার বলল, ‘ভাই আমি একবার ভাবিতে গমন করতে চাই। তুমি ব্যবস্থা করো ভাই। না হলে আমি আর পারছি না।’
ভাই আসাদের কথা শুনে ওসমান কেমন অসহায় বোধ করে। তবু কোনোরকমে বলে, ‘তুই কী বলছিস তা কি তুই জানিস আসাদ?’
আসাদ চিৎকার করে বলে উঠল, ‘জানি বলেই তো বলছি। এখন আর হাত নাড়িয়ে আমার ক্ষরণ হয় না। আমি ঘুমোতে পারছি না ভাই। আমার ঘুম আসছে না। আমি আর স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছি না। আমার কাছে কোনও মহাভাষ্য আসছে না। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।’
ওসমান লক্ষ করছে, কথা বলতে বলতে আসাদ সত্যিই যেন পাগল হয়ে যাচ্ছে। কী রকম ভয়ংকর রকমের অঙ্গভঙ্গি করছে। ওসমান বুঝতে পারছে না এখন সে কী করবে? আসাদকে কী বলবে? আসাদের ভাবি মানে তো তার স্ত্রী। জারিনা বিবি। যার এক পুত্র আছে। নাম সাদাত। আর এক কন্যা। নাম শিউলি। সাদাত পার্শ্ববর্তী টাউনের স্কুলের ছাত্র। উচ্চমাধ্যমিক পড়ছে। শিউলি গ্রামের প্রাইমারির ছাত্রী। সাদাত ও শিউলিকে আসাদ রোজ পড়ায়। তাছাড়া আসাদ জারিনাকে খুব সম্মানও করে। ‘আপনি’ সম্বোধনে কথা বলে। অথচ আজ সে-ই কিনা বলছে…
শেষ পর্যন্ত, আসাদকে ওসমান নিয়ে যায় সেই তাদের পুরনো আড্ডায়, হোলার বাগানের সেই জঙ্গলে। বুঝিয়ে সুঝিয়ে কোনোরকমে শান্ত করে। তারপর জিজ্ঞেস করে, ‘এ তোর কেমন পাগলামি আসাদ?’
আসাদ বলল, ‘এ আমার পাগলামি নয় ভাই। ভারতীয় ঋষিরা গল্পচ্ছলে একটা তত্ত্ব প্রকাশ করেছে। সেটা হল, তারা শিবের জটাকে স্থান দিয়েছেন হিমালয়ের উচ্চতায়। ওই উচ্চতায় ওঠাটা যেমন কষ্টকর, তেমনই রাগ-কাম-ক্রোধ-ঈর্ষা-হিংসা-লোভ-মোহ-অহংকার-দাম্ভিকতাকে অতিক্রম করে রক্ষণকামিতাকে নিয়ন্ত্রণ করে চেতনার ওপরের স্তরে ওঠাটাও কষ্টসাধ্য। তাই ঋষিরা জটা থেকে উৎসারিত ফোয়ারাকে ধারার মধ্যে দিয়ে নিয়ে গিয়ে নদী তৈরি করলেন। আর, সেই নদীর নাম রাখলেন “গঙ্গা”। গঙ্গা মানে হল গমনেচ্ছু। অর্থাৎ সে চলতে চায়। হিমবাহের জলধারার মধ্যে দিয়ে নদীতে দীর্ঘ দিন দীর্ঘ দীর্ঘ রাস্তা অতিক্রম করে বা প্রবাহিত হয়ে সাগরে গিয়ে মেশে। মানুষকেও সেরকম হতে হবে ভাই। তুমি তোমার ডায়েরিতে এসব তত্ত্ব লিখে রাখোনি? অনেকদিন আগে আমি পড়েছিলাম তোমার সেই ডায়েরি। তখন বুঝতে পারিনি। কিন্তু আজ বুঝতে পারছি। আমি তো সেরকমটাই হতে চাই। আমি চেতনার একেবারে ওপরে উঠতে চাই। তুমি আমাকে সাহায্য করো। আমাকে অন্তত একবার ভাবিতে গমন করতে অনুমতি দাও ভাই।’
ওসমান তার নিজের তত্ত্বে নিজের কাছে বাঁধা পড়ে যায়। সে বাড়ি ফিরে আসে। কিন্তু স্বস্তিতে থাকতে পারে না। কীভাবে কথাটা বিবি জারিনাকে বলবে, বুঝতে পারে না। সন্ধ্যাটা ওই ভাবনাতেই কাটে তার। তারপর রাতের খাওয়াদাওয়া হয়ে গেলে জারিনাকে কাছে ডাকে। জারিনা হাড়ি-হেঁশেল সামটে তার কাছে আসে। জিজ্ঞেস করে, ‘বলেন, কী বলবেন?’
ওসমান সরাসরি বলতে পারে না। একটু ঘুরিয়ে বলার চেষ্টা করে, ‘বুঝলে, আমাদের সামনে, বিশেষ করে তোমার সামনে মহামানবী হওয়ার একটা সুবর্ণসুযোগ এসেছে। তুমি যদি আমাদের প্রস্তাবে রাজি হও তাহলে তুমিই হবে ভাবী পৃথিবীর বিখ্যাত সেই মহামানবী। পৃথিবী যতদিন থাকবে তুমি মানুষের সম্মান পেয়ে যাবে।’
ওসমানের কথা শেষ হতে দেয় না জারিনা বিবি, ফোঁস করে ওঠে, ‘কোন সম্মানের কথা বলছেন আপনি? আমাকে আজ পর্যন্ত কোন সম্মান দিয়েছেন? সামান্য স্ত্রীর সম্মানটুকুই তো দেননি! আপনি আমার সঙ্গে শয়ন করেন ঠিকই, কিন্তু আপনার মগজে থাকে আপনার স্কুলের ছাত্রীদের কচি-কচি শরীরগুলি। এমনকী, আব্দুল ফকিরের বউ জান্নাতুনের শরীরকেও আপনি ছাড়েন না। আপনি আমার শরীরে ভর করে ওইসব শরীরগুলিকে চিবিয়ে খান। আমি কি এতই মূর্খ? আমি কি কিছুই বুঝি না ভাবেন? সব বুঝি। কিন্তু কিছু বলি না। কিছু বলি না, আমার কোনও উপায় নেই বলে। তবে এরপর আপনি যদি আমাকে আর কিছু বোঝাতে আসেন, আমি ছেড়ে কথা বলব না কিন্তু! আপনার বিরুদ্ধে সালিশ ডাকব। বিচার বসাব।’
তাহলে কি রিয়াজ সরকার তাকে ডেকে সেদিন সেরকম বিচার করল? আগের কোনও ব্যাপারে অসন্তুষ্ট হয়ে নিশ্চয় জারিনা গিয়ে রিয়াজ সরকারের কান ভাঙিয়ে থাকবে। যখন গ্রামের স্বঘোষিত মাতব্বর ওই রিয়াজ সরকার। খটকা লাগে ওসমানের। কিছু বুঝতে পারে না। আবার অপমানটাও হজম হয় না তার।

=======

আসাদের কাছে মহাভাষ্য আসে। তার মু-বোলা ভাই ওসমান সেইসব ভাষ্য ব্যাখ্যাসহ খাতায় লিখে রাখে। বিশ্লেষণ করে। তারা চায় মানবজমিন আবাদ করে মানুষের জ্ঞানচক্ষু খুলে দিতে। মানুষকে সত্যিকারের মানুষ করে তুলতে। গ্রামে রটে যায় আসাদ নাকি নবিতে উন্নীত হয়েছে। তার কাছে আল্লার ওহি আসছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা রিয়াজ সরকার দু-ভাইকে ডেকে সতর্ক করেন। ঘটনাচক্রে রিয়াজ সরকার খুন হলে তাঁর মেয়ে রাজিয়া, ওসমানের প্রিয় ছাত্রী, ওসমানের পুত্রবধূ হিসাবে সংসারে প্রবেশ করে। ইতিমধ্যে আসাদ ও ওসমান তাদের ভাষ্য অনুসারে পুরুষ-নারী নির্বিশেষে যে কোনও শরীরে গমনের তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করে।
নীহারুল ইসলামের ‘ইচ্ছাপুতুল’ ক্ষমতা-প্রেম-যৌনতার রাজনীতিকে অন্য ভাষায় বয়ান করেছে। এক নারীর আত্মসমপর্ণের কিনারা থেকে আত্মবিশ্লেষণে ফিরে আসা এই উপন্যাসের অন্যতম প্রাপ্তি।

Shipping & Delivery

Welcome to MatriBhasa

We are the premier online destination for Bengali books, offering the largest selection at the highest discounts.

To ensure that our books reach you in perfect condition, we ship them using India Post, renowned for its reliability and extensive reach.

  • Every package is carefully and meticulously wrapped, providing an added layer of protection during transit.
  • Whether you're located in a bustling city or a remote village, rest assured that we deliver worldwide with precision and care.
  • Our commitment to excellence means that no matter where you are, your books will arrive safely and in pristine condition, ready to be enjoyed.
0 reviews
0
0
0
0
0

There are no reviews yet.

Be the first to review “Ichchaputul (ইচ্ছাপুতুল) || Niharul Islam”

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You have to be logged in to be able to add photos to your review.