প্রতীকের রাজনৈতিক চেতনার উপন্যাস।
আপাতভাবে এই আখ্যান পিতা-পুত্রের। দুই প্রজন্মের, দুই পৃথিবীর স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষার রংবদল, সেই কারণে জীবন-নীতি-মূল্যবোধের সংঘাতে এগিয়ে যায় কাহিনি। পরত সরালে সন্ধান মেলে আর-এক গভীরতর আখ্যানের। বাংলার কয়েক দশকের রাজনৈতিক বিবর্তন, গড়ে-ওঠা এবং ভাঙনের ইতিবৃত্ত অন্তর্লীন হয়ে থাকে প্রজন্ম আর পরম্পরার গল্পে। যে লাল স্বপ্ন বুকে নিয়ে একদিন বাংলার বহু মানুষ গড়তে নেমেছিলেন মানুষের পৃথিবী, এ কাহিনি চেনাতে থাকে সেই স্বপ্ন আর স্বপ্নের কারিগরদের। তাঁরা কেউ খবরের কাগজ নির্দিষ্ট নেতা নন। মানুষ হয়ে তাঁরা মানুষের পাশে থেকেছেন বলেই একদিন মানুষ আপন করে নিয়েছিল তাঁদের দল ও চেতনাকে। এ কাহিনি স্পষ্টই দেখিয়ে দেয়, কোনও আদর্শের রূপায়ণে তত্ত্বের ভূমিকা অনস্বীকার্য, তবু শুধু তত্ত্বেই তার শেষ নয়। তত্ত্ব, তথ্য আর দল পেরিয়েও পড়ে থাকে এক বৃহত্তর মানুষের পৃথিবী। আদর্শের গন্তব্য সেই বিন্দুতেই। কোনও কোনও মানুষ তাঁদের জীবন দিয়ে এই আদর্শকে সঞ্চারিত করেন সমষ্টির মননে। গড়ে ওঠে পার্টির সাম্রাজ্য। আবার ইতিহাসের নিয়মেই তাতে একদিন চিহ্নিত হয় পতনের কারণসমূহ। আর স্বপ্ন-দেখা সেইসব মানুষেরা ক্রমে হয়ে যান ইতিহাসের ফুটনোট। এই কাহিনির কেন্দ্রে সেরকমই একজন অকীর্তিত মানুষ। যাঁর গোটা জীবনটাই হয়ে ওঠে সময়ের ইশতেহার। যে পতাকা তিনি নিজে হাতে তুলে নিয়েছিলেন, সেই পতাকাই তিনি দিয়ে যান তাঁর উত্তরসূরির হাতে, তবে দলীয় রাজনীতির সূত্রে নয়। নাড়ির টান মিশে যায় মানুষে মানুষে বন্ধনের প্রবাহে। বাবাকে অস্বীকার আর পুনরাবিষ্কারের ভিতর দিয়ে ছেলে শেষমেশ খুঁজে পায় এই বাংলার মানুষের রাজনীতির চেতনাসূত্রটিকেই।
Reviews
Clear filtersThere are no reviews yet.