দশ থেকে পঞ্চাশ বছরের নারীদের কেরলদেশে শবরীমালা মন্দিরে অনুপ্রবেশ নিয়ে যখন সারা ভারত উত্তাল, তখন সিক্ত নয়ন রুক্ষ বেশে এক দেবী মূর্তি শীর্ষেন্দুর স্বপ্নাদেশে উদিতা হয়ে বললেন………
“অরে বাছা শীর্ষেন্দু শুনহ মোর বাণী।
নারীরূপিণী আমি নেতামাতাধোপানি।।
রমনীকুলের দুর্দশা দেখিয়া, যাতনা হয় মনে।
তাহাদের উদ্ধার করো, পুরুষ জনে জনে।।”
যখন দেবীমুর্তির মুখ কাপড়ে ঢেকে রেখে উৎসব পালিত হয়, সেই অম্বুবাচির সময় অম্বুবাচিরই পঞ্চদিনে শ্রীক্ষেত্র জগন্নাথধামে রক্তপদ্মাসনে অভিষিক্তা, মৎস্যবাহনা, দ্বিভূজা সেই একই দেবীমূর্তি আবার আবির্ভূতা হয়ে জানালেন……..
“আষাঢ় মাসে যখন সবই, অম্বুবাচি চলিবে।
ঋতুকালে নারীগণে, মোর পূজা করিবে।।
‘সতীর পুণ্যে পতির পুণ্য’- বলিও ব্রতসুমধুর।
শান্তি রইবে আলয়, দুঃখ হবে দূর।।”
অষ্টোওর শতনামে দেবীর আরাধনা করে চাঁদসদাগর পদ্মমধু আর কদমফুলে দেবীর পূজা দিলেন। বনিক শ্রেষ্ঠ চাঁদের কাছ থেকে পূজা পেয়ে ঘরে ঘরে দেবীর পূজা প্রচলিত হল। আর তার সাথে সাথে পদ্মাবতী মনসার সহচরী নেতাধোপানি দেবীরূপে প্রতিষ্ঠা পেলেন। এখানে এই দেবীই হলেন নেতাধোপানি।
সিঁজুয়া পর্বতে থাকাকালীন মনসার সহচরী রূপে নিযুক্ত হন নেতাধোপানি।দেবী চণ্ডীর রোষ থেকে বাঁচানোর জন্য দেবাদিদেব মহাদেব নিজের মানস কন্যা পদ্মাবতী মনসাকে রেখে আসেন পাতালের সিঁজুয়া পর্বতে। আর সেখানেই মনসার দেখাশোনা করার জন্য নিযুক্ত হন শিবেরই আরেক কন্যা শিবনেএজাত নেতা। সুরপুরের ঘাটে দেবতাদের কাপড় ধোওয়ার কাজে নিযুক্ত করে কন্যা নেতাধোপানিকে রেখে যাওয়ার সময় চরম অভিমানে নেতাধোপানি পিতা মহাদেবকে তাঁর সাথে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে বলেন ‘সঙ্গে করি লহ বাপা’। পিতা মহাদেব তা অস্বীকার করলে সেই থেকেই সিঁজুয়া পর্বতবাসিনী
নেতাধোপানি। নিজে শিবকন্যা হয়েও স্বর্গআসন তাঁর কাছে অধরা। ‘নেতাধোপানি চরিতমঙ্গল’ এই অসহায় নেতাধোপানির সুরপুরের ঘাট থেকে স্বর্গ আসন লাভ করার সুদীর্ঘ যাত্রাপথের ঘটনাবহুল বিবরণ দেয়।
“বিশ্বপৃথিবী- বিশ্বজন্ম, সবই নারীর হেতু।
অজড় সব নারীর সন্তান, স্নেহ-মমতার সেতু।।
মাতৃকারূপে ধারণ করেন, গর্ভধারিনী মাতা।
দুধেভাতে আগলে রাখেন, দুঃখ-বিপদ ত্রাতা।।”
এরপর কি হল?
Reviews
Clear filtersThere are no reviews yet.