Description
পুস্তকটি ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত ত্রিখণ্ড পুণ্ডরীক সূত্রের সরল ব্যাখ্যা। ত্রিখণ্ড পুণ্ডরীক সূত্রের তিনটি খণ্ড হল — সপ্তম পুত্ৰৰীক সূত্র, অমিতার্থ সূত্র এবং বুদ্ধভাষিত সমস্তভদ্র বোধিসত্ত্বের তপস্যা-বিধি সূত্র। বিখ্যাত মধ্য এশিয়ার ভিক্ষু কুমারজীব (৩৪৪-৪১৩) পঞ্চম শতাব্দীর প্রারম্ভে সঙ্কর্ম পুণ্ডরীক সূত্র সংস্কৃত থেকে চীনা ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন। অমিতার্থ সূত্র সপ্তম পুণ্ডরীক সূত্রের মুখবন্ধ সূত্র এবং বুদ্ধভাষিত সমস্তভদ্র বোধিসত্ত্বের তপস্যা-বিধি সূত্র সঙ্কর্ম পুণ্ডরীক সূত্রের উপসংহার সূত্র রূপে পরিচিত। ত্রিখণ্ড পুণ্ডরীক সূত্রের অন্য একটি নাম পুণ্ডরীক সূত্র। এই সূত্রগুলি ভগবান শাক্যমুনি ও তাঁর শিষ্য এবং বোধিসত্ত্বদের কথোপকথনের উপর ভিত্তি করে রচিত হয়। উপমা বা রূপক ও অতীতের কর্মফলের কাহিনি দিয়ে সূত্রটিকে একটি নাটকের মতো অতীব সহজ বোধগম্য করে রচনা করা হয়েছে। শাক্যমুনি বুদ্ধ বৌদ্ধধর্মের মূল বক্তব্য শূন্যতা ও হেতু-প্রত্যয়ের মতবাদকে ভিত্তি করে যে একবুদ্ধযানের চিন্তাধারাকে তাঁর শিষ্যদের কাছে ব্যাখ্যা করেছেন, তা এই সন্ধৰ্ম পুণ্ডরীক সূত্রে নিহিত আছে। এই মতবাদকে সংক্ষেপে ‘সকল প্রাণীর মধ্যে বুজাভুর বিদ্যমান’, ‘সবকিছু বেঁচে থাকার মূলে আছে শাশ্বত প্রাণ’ ও ‘নিজের সঙ্গে অন্যের মুক্তির আদর্শে অনুপ্রাণিত বোধিসত্ত্ব-মার্গের একমাত্র লক্ষ্য শাস্তি’, এই তিনটি কথায় প্রকাশ করা যায়। ত্রিখণ্ড পুণ্ডরীক সূত্র বহুদিন পূর্বে রচিত হয়। তখন সংস্কৃতি ও লোকাচার ছিল ভিন্ন। সেই জন্য এর কোনও কোনও অংশ একটু অদ্ভূত বলে মনে হবে। এই পুস্তকটিতে এইরূপ অংশকে অতি সরল বোধগম্য করে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আর সেই সঙ্গে সূত্রের ভাষার মধ্যে যে গুহ্য অর্থ সুক্কায়িত আছে তাকে, এবং তার উপর ভিত্তি করে মানুষের সত্যিকারের বাঁচবার পথ’ কে আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। ব্যাখ্যাকার পুণ্ডরীক সূত্রকে যে কতবার আবৃত্তি করেছেন তার ইয়ত্তা নাই। আর এর মধ্যে যে উপদেশ নিহিত আছে তা যথাযথ পালন করতে কোনও ত্রুটি রাখেন ও। ফলে তিনি শাক্যমুনির উপদেশের মর্মার্থ উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তিনি এই মর্মার্থ সকলকে বুঝিয়ে বলেছেন, এবং প্রমাণ করেছেন যে শাক্যমুনির উপদেশ আজও আমাদের জীবনে প্রযোজ্য। তিনি বৌদ্ধধর্মের আধুনিক গবেষণালব্ধ ফলকে ভিত্তিরূপে গ্রহণ করে, বুদ্ধের ধর্মকে আমাদের জীবনে প্রতিফলিত করে কীভাবে সত্যিকারের সুখী জীবন যাপন করা যায়, তা অতি সরল ভাষায় বুঝিয়ে বলেছেন। শাক্যমুনির উপদেশ গত আড়াই হাজার বছর আমাদের মধ্যে বেঁচে আছে। আশা করি এই ব্যাখ্যা বাংলার পাঠক মণ্ডলীর দৈনন্দিন জীবনের পাথেয় ও জীবন যাত্রার পথিকৃৎ রূপে কাজ করবে।
সরোজকুমার চৌধুরী
Reviews
Clear filtersThere are no reviews yet.