সংকটে গৌড় (সূচনা পর্ব) || Sonkote Gaur (Suchona Porbo)

শাঙ্ক পরবর্তী গৌড়বঙ্গের ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা গৌরবময় সময়কালটি হলো গৌড়াধিপ সম্রাট ধর্মপালের সময়কাল। গৌড় তৎকালীন সময়ে শুধুমাত্র ভারতবর্ষের রাজনীতিতে নির্ণায়ক শক্তিরূপে আত্মপ্রকাশ করেছিল তা নয়, সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উন্নতির শিখর স্পর্শ করেছিল। সম্রাট ধর্মপালের প্রচলিত স্বর্ণমুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে, বিভিন্ন নথি থেকে জানা যায় তৎকালীন সময়ে বাংলার বণিকেরা দলবেঁধে সারা জম্বুদ্বীপেই শুধু নয় বহির্বাণিজ্যেও যেত। গৌড়ের সুমিষ্ট গুড় এবং গৌড়ীয় মাধ্বীর কদর সারা দেশে। প্রকৃতই ধণলক্ষ্মী তখন গৌড়ের শ্যামল মাটিতে অধিষ্ঠান করতো— তাই হয়ত ধর্মপালের মুদ্রার একপিঠে অঙ্কিত ছিল শ্রী।
সব কিছুই কী ছবির মতো সুন্দর ছিল? ভারতবর্ষের ইতিহাসে তেমনটা কখনও হয়েছে? সেই সময়ই শুরু হয় ত্রিশক্তি সংগ্রাম যার রেশ চলে পরবর্তী বেশ কিছু বছরও। তবে শুধু বাইরের শত্রুই নয়, সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরে কী সর্বদাই শান্তি বিরাজ করত? আশ-পাশের রাজ্যগুলি বিজয়ের মাধ্যমে যতো বৃদ্ধি পেয়েছে গৌড়ের সীমা ততই বৃদ্ধি পেয়েছে শত্রু সংখ্যা। এই প্রেক্ষাপটেই রচিত হয়েছে “সংকটে গৌড় (সূচনা পর্ব)”, যেখানে বিক্ষুব্ধ কিছু সাধারণ মানুষের রাজশক্তির বিরুদ্ধে জোটবেঁধে ষড়যন্ত্রের কাহিনি লিপিবদ্ধ হয়েছে। সম্মুখ সমর নয়, অথচ অর্থনীতি ধ্বংস করার এক ভয়ানক ষড়যন্ত্র যেখানে জড়িয়ে পড়ে একটি বিশেষ বৌদ্ধ বিহার। আবার সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে এগিয়ে আসে সাধারণ মানুষই। এক স্বল্প বয়সী নবযুবক বৌদ্ধ ভিক্ষু অমিত বুদ্ধিবলে টক্কর দেয় অত্যন্ত প্রতিভাবান এক ভিক্ষু ষড়যন্ত্রকারীর। নরহত্যার মতো মহাপাপ ঘটে বৌদ্ধ বিহারে। কিন্তু এমন হীন অপরাধে কেন জড়িয়ে পড়ল সেই প্রতিভাবান ভিক্ষু, কেনই বা সে জড়াল বৌদ্ধবিহারটিকে? ষড়যন্ত্রের শিকড় গভীরে, ডাল-পালা বিস্তারলাভ করেছে সমাজের বিভিন্ন স্তরে, বিভিন্ন পেশার মানুষদের ভেতর..গৌড়ের সীমা ছাড়িয়ে শত্রু শিবিরেও। তারপর…
অঙ্গিরা দত্ত দন্ডপাটের কলমে ঐতিহাসিক উপন্যাস
সংকটে গৌড়
(সূচনা পর্ব)