Short Stories

স্যান্ডো গেঞ্জি – মনীষ মুখোপাধ্যায়

এই তুচ্ছ জীবনে কত কম জানি। তা নিয়ে যদিও আক্ষেপ নেই, তবুও জানা উচিৎ এই আর কী!

মাঝেমধ্যে রবিবার বেলার দিকে আমাদের লুঙ্গিগ্যাঙের আড্ডা বসে। সুখ দুঃখের দুটো কথা ভাগ করে নিই। কালকেও তেমন একটা বিশুদ্ধ আড্ডা জমে উঠেছিল। আড্ডার প্রসঙ্গের কোনো ঠিক ঠিকানা থাকে না। বাড়ির প্ল্যান থেকে অ্যালকোহল হয়ে আড্ডার ক্ষেত্র পৌঁছে যায় বাড়ির পোষ্যটি পর্যন্ত। কার বিড়াল মাছ ছাড়া খেতে পারে না, কার কুকুর কোন ডাক্তারের কাছে চেকআপ করাতে যায় এইসব নিয়ে চায়ের সঙ্গে সঙ্গে জমে ওঠে গল্প।

কাল আমাদের লুঙ্গি কাকা প্রসঙ্গটা তুলল। তার পোষ্যকে নিয়ে সে যায় বিখ্যাত একজন পশুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। সেখানে এক জাঁদরেল পিটবুল আসে। পিটবুলের গলায় থাকে পিতলের চকচকে চেইন দেওয়া লেস্‌। সেই পিটবুলের মালিকের চেহারা সলমন খানের মত! আর মালকিন ভীষণ স্মার্ট মহিলা। ওই ক্লিনিকে ওই পিটবুল এবং তার মালকিন যেদিন আসে সেদিন নাকি ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান খেলার মাঠের ভিড় জমে যায়। কারণ, মালকিন পরে আসে Spaghetti top।

এইখানেই আমার মত লুঙ্গি ভাইপো ধাক্কা খেলো। এই নাম আমি বাপের জন্মে শুনিনি। নামটা শুনেই বোকার মত প্রশ্ন করলাম, সেটা কী টপ কাকা?

কাকা অঙ্গুলি হেলন করল আমাদের গ্যাঙের গুগুল ভাইয়ের দিকে। সে গুগুল ভাই আখ্যা পেয়েছে একটি বিশেষ গুণের কারণে। সে যে গুগুলের মত সিঁধুজ্যাঠা, তা কিন্তু নয়। তার বিচক্ষণতা হল সেকেন্ডের ভগ্নাংশে গুগুল খুঁজে সব কিছুর সন্ধান করে দেয়। গুগুল ভাই নিজের মোবাইলে সাড়ে সাত সেকেন্ডের মাথায় একটা ছবি বের করে ক্লান্ত গলায় উত্তর দিল, ওহ্‌ স্যান্ডো গেঞ্জি!

আমরা পরলে যেটা স্যান্ডো গেঞ্জি। যেটা পরলে বাড়ির টিকটিকি ছাড়া কেউ দেখে না। সেটাই ওই ম্যাডাম পরলে ডার্বির ভিড় জমে যায়! আজব এই দুনিয়া…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *