• এই বইয়ের প্রথম গল্প ‘শোধ’।
    ঋতবাক-এ প্রকাশিত এই গল্পটি অনেকেই পড়েছেন। বাস্তব ইতিহাস, ঠগিদের কীর্তিকলাপ, মানবিক অসহায়তা, আর তন্ত্রের বীভৎসতা, এসবের উদাহরণ কতটা ভয়াল, কতটা উপাদেয়, এবং কতটা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, তা বোঝার জন্য এই গল্পটি যথেষ্ট। এতে ভয় আছে, আছে কিছু বর্ণনায় ঘাড়ের কাছের ছোটো-ছোটো চুলগুলোকেও প্রায় দণ্ডায়মান করে দেওয়া অনুভূতির জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা। কিন্তু এই গল্পটি অতি-অতি বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে তার ইতিহাসে, ঠগিদের কাজের নিপুণ বর্ণনায়, এবং কন্যার মৃত্যুতে পাগলপারা এক মানুষের হাহাকারে।
  • দ্বিতীয় গল্প ‘রক্তফলক’।
    বিশুদ্ধ ভয়ের গল্প হিসেবে এটির মতো কাহিনি আমি কমই পড়েছি। শুধু অতিলৌকিক পরিবেশ ও দেবদেবীদের বর্ণনা নয়, এই গল্পের সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হল এতে ফুটিয়ে তোলা মানুষী শয়তানি। এই চরম ‘অশুভ’-র বাস্তবতা ও সম্ভাবনা আমার-আপনার মতো প্রতিটি কন্যাসন্তানের পিতা-মাতাকে আরও বেশি করে তাড়িত করবে, বাক্‌রুদ্ধ করবে, নিজের অজান্তেই আমাদের হাতদু’টো এক করে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বা পুলিশের কাছে প্রার্থনা জানাবে, যাতে আমাদের কন্যারা নিরাপদে থাকে।
  • তৃতীয় গল্প ‘ভোগ’।
    এই গল্পটিও আগে ঋতবাক-এ প্রকাশিত হয়েছিল। তন্ত্র-নির্ভর ভয়ের গল্পের ক্ষেত্রে এটিই শেষ কথা হয়ে থাকবে। যদি এখনও এই গল্প না পড়ে থাকেন, তাহলে শুধু এটুকুই লিখি যে অনাহূতভাবে এক মানুষের ঘরে এসে পড়ে এক দেবীমূর্তি, আর তার পূজা নিয়ে তারপর ... গায়ে কাঁটা দিচ্ছে! তাই আর কিছু লিখছি না। বাকিটা পড়ুন, আর তারপর দিনের বেলাতেও শুকনো গলায় বাইরেটা দেখে বোঝার চেষ্টা করুন যে হঠাৎ হওয়া অন্ধকারটা আকাশে মেঘ জমার ফলে হয়েছে, নাকি মিহি বরফের মতো আপনার বাড়ির ওপরেও নেমে আসছে গুঁড়ো-গুঁড়ো কোনো অপ্রাকৃত অন্ধকার!
  • চতুর্থ লেখা, তথা প্রায়-উপন্যাস ‘ইনকুইজিশন’।
    এই কাহিনির সূত্রপাত প্রায় পাঁচশো বছর আগে, যখন পোপের ইচ্ছাপূরণ করার জন্য এক পর্তুগিজ অভিজাত সসৈন্য হামলা চালিয়ে, মহাবেতাল মন্দিরের গোপন গর্ভে রাখা এক আশ্চর্য জিনিস কেড়ে নিয়েছিলেন সেই মন্দিরের পুরোহিতের কাছ থেকে। শুধু সেই অপার্থিব বস্তুটি লুণ্ঠনই নয়, মন্দিরের পুরোহিত ত্রিলোচন ক্ষেমকল্যাণী ও তাঁর পরিবারকে, এমনকি পুরোহিতকে সেই জিনিসটি নিয়ে পালাতে সাহায্য করা মানুষদেরও বর্ণনাতীত অত্যাচার করে হত্যা করা হয়েছিল। নিঃসীম প্রতিশোধস্পৃহা সেই পুরোহিতের মুখ দিয়ে এমন এক অভিশাপ উচ্চারণ করায় যার প্রকোপে পর্তুগিজ অভিজাতটির পরিবারের ওপর নেমে আসে বেতালের করাল দংষ্ট্রা। হাল ছেড়ে দেয়নি সেই পরিবার। অনুতাপের আগুনে দগ্ধ মানুষের প্রায়শ্চিত্ত, আর সন্তানের মঙ্গলকামনা মিশে গেছে তাদের আকুলতায়। অবশেষে তারা জানতে পেরেছে কীভাবে এই অভিশাপ কাটবে।
    তারপর কী হয়? এই বইয়ের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী রচনা এটি। 

গৌরব মুখার্জী লিখেছেন -

"বইটা ভয়াবহ।

নিজের ভয় সহ্য করার লিমিট টেস্ট হয়ে গেল প্রায়।"

"বই এ দুটো গল্প আছে।

এক - কালিয়া মাসান : খুব ভালো ভাবে বলা একটা গল্প। গল্পের প্লট খুব ভালো। গোটা গল্প রহস্য আর উৎকণ্ঠায় ডুবে থাকবেন। তবে গল্পের শেষ টা এতো সুন্দর যে প্রায় চোখে জল চলে আসবে আনন্দে। (আমার তো এসেছিলো )

দুই - খোঁড়া ভৈরবীর মাঠ : এটাই প্রধান গল্প বলা যায়। গল্পের লেখার ধাঁচ দারুন। গল্পের শুরু থেকে শেষ শুধু আতঙ্ক অনুভব করবেন। ২কেজি দুধ মেরে ৫০ গ্রাম ক্ষীর বানানো যেমন এই গল্পে ঠিক সেভাবে অনেকটা ( অনেক অনেক অনেক অনেক অনেকটা ) ভয় কে ঘনীভূত করে পেশ করা হয়েছে। একা একটা ঘরে বসে পড়ার ভুল আমি করেছি আপনি দয়া করে করবেন না। ( বা করতেও পারেন। এডভেঞ্চার বেশ। তবে সাবধান করা কর্তব্য তাই করলাম)"

এক নারকীয় প্রেতবস্তু আর দেড় হাজার বছর থেকে শুরু করে আজ অবধি ঘটে চলা তিনটি আপাতবিচ্ছিন্ন সময়স্রোতের সঙ্গে মিশে গেছে গুপ্তচরবৃত্তির হিংস্র ইতিহাস, বিশ্বাসঘাতকতার প্রায়শ্চিত্ত, বন্ধুত্বের অভেদ্য বন্ধন।

১) তেলিয়াভোলা: শিশু-কিশোর পাঠকদের জন্য রচিত এই কাহিনিটির চলন প্রত্যাশিত হলেও এতে প্রকৃতির যে ভয়ংকর সুন্দর রূপের বর্ণনা আছে, তার জন্যই এটিকে মনে রেখে দিতে হয়। আর গল্পের শেষটা! লেখার গুণে মনে হয়, যেন আমি নিজেই অনুভব করছি মায়ের সেই বিশাল, ইন্দ্রিয়াতীত রূপকে— যা দুষ্টের দমন করে, আবার শিষ্টের পালনও করে।

২) প্রেতযক্ষ: এটি এই বইয়ের শ্রেষ্ঠ লেখা। শুধু তাই নয়; আমার মতে, অলৌকিক বিষয় নিয়ে সাম্প্রতিককালে বাংলায় যত লেখালেখি হয়েছে, তাদের মধ্যে এটিকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বলা চলে। লেখাটি এই পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে শুধু একটি উপাদানের জন্য— মায়া! এই গল্প পড়তে গিয়ে নিজের অজান্তেই চোখ ভিজে উঠেছে বারবার। সত্যি-সত্যিই মনে হয়েছে, এনট্রপির অমোঘ নিয়মে সবকিছু ছিন্নভিন্ন হয়ে বিশৃঙ্খলার গভীরে হারিয়ে যাওয়ার আগে আমাদের এই ক্ষণকালের জীবন, সময়ের সমুদ্রে বিবৎ এই সুখ-দুঃখ দিয়ে সাজানো অস্তিত্ব সম্ভব হয়েছে ভালোবাসা নামক ওই অদ্ভুত জাদুটির জন্যই।

৩) কাউরীবুড়ির মন্দির: ভয়ালরসের কাহিনিও যে কতখানি জটিল, মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক এবং রিপুতাড়িত হতে পারে, তা এই উপন্যাসটি পড়লে বোঝা যায়। পটভূমি-নির্মাণ, চরিত্রচিত্রণ, সর্বোপরি মানবমনের অন্ধকারতম বিন্দুদের জুড়ে ভয়ের এক অভাবনীয় মূর্তি গড়া— এ-সবের জন্য এর আগেই এই কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক পাঠকদের জন্য রচিত উপন্যাসটি স্বতন্ত্রভাবে পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম। এখন, 'ভবতারণ' প্যাকেজের অঙ্গ হিসেবে সেটিকে পড়ে আবারও শিহরিত হলাম।

৪) হাড়িকাঠ: অলৌকিক কাহিনির মোড়কে মনস্তাত্ত্বিক রহস্য-কাহিনি হিসেবে নির্মিত এই লেখাটি বইয়ের দুর্বলতম আখ্যান। তবে হ্যাঁ, লেখার গুণে তার মধ্যেও বেশ কিছু অংশ মনে থেকে যায় স্থায়ীভাবে।

ঋজু গাঙ্গুলীর দার রিভিউ এর অপেক্ষ্যায় -

Limited Edition Signed Copy Available

Ebong Inquisition || Avik Sarkar

Original price was: ₹300.00.Current price is: ₹225.00.

Khora Bhoirobir Maath || Avik Sarkar || Limited Edition Signed Copy

Original price was: ₹150.00.Current price is: ₹112.50.

PetBotthu(পেতবত্থু) || Avik Sarkar || Limited Edition Signed Copy

Original price was: ₹225.00.Current price is: ₹168.75.