।। রাঢ় পাঞ্চালিকা।।
বাংলার লোকসংস্কৃতির মূল এতটাই গভীরে, কোনও ইতিহাসের অনুসন্ধিৎসু হাত তার সবখানে পৌঁছাতে পারেনি। কয়েক পা হাঁটলেই যেখানে ভাষারীতি, বাচনভঙ্গি, লোকাচার পালটে যায়, সেই বিশাল জনপদের আনাচে-কানাচে, আঁদাড়ে-বাদাড়ে, খালে-বিলে-নয়ানজুলিতে যে লোকায়ত আচার-বিচার-পরব, শত কথকতা, হাজারো গালগল্প, লাখো ছড়া-টীকা-টিপ্পনী ছড়িয়ে থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। তথ্যানুসন্ধান করতে গেলে দেখা যায়, একটি ছোট্ট লোক-শব্দের দরজা দিয়ে ঢুকে এক সাগরভরা মণিমাণিক্যের মধ্যে গিয়ে পড়া গেছে। কী নেই সেখানে! ভাষার তাত্ত্বিক সন্ধান, জনজাতির প্রাচীন ইতিহাসের হাতছানি, তাঁদের যাপনের পরতে জড়িয়ে থাকা শত পরবের সহস্র তরিকা, তাঁদের নিজস্ব লোকাচারের উদ্ভব এবং সমাজজীবনে তার গুরুত্ব, তাঁদের ধর্মাচরণের রূপ এবং পাশাপাশি অন্যান্য জনগোষ্ঠী থেকে তাঁদের উক্ত সব বিষয়ে প্রভেদ—কোনও একটাকে বাদ রেখে অন্য একটার চর্চা অন্ধের হস্তীদর্শনের মতোই হয়। কোনও জনজাতির ইতিহাসের এইরকম সামগ্রিক চর্চা হয়েছে বলে জানা নেই, আমরা এই বইয়ে সে চেষ্টাও করিনি। কিন্তু সেই চর্চা কীভাবে হতে পারে, তার কিছু টুকরো-টাকরা কণা এখানে একত্র করা হয়েছে।
এই বইয়ের প্রবন্ধগুলিতে ব্যবহৃত লোকশব্দ ও অনুরূপ অন্যান্য শব্দগুলি একেকটি সম্ভাবনাময় জাদু-শব্দ, যেগুলির সঙ্গে জড়িয়ে আছে সংশ্লিষ্ট জাতির সুপ্রাচীন ইতিহাসের স্বরূপ, তাদের জনজীবন, তাদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া।
এর যে-কোনো একটা টুকরোয় ঠিকমতো হাত রাখতে পারলে খুলে যাবে সংশ্লিষ্ট জাতির জনজীবন-চর্চার সামগ্রিক ইতিবৃত্তের জাদু-দরজা। পাঠককে সেই দরজাটির কাছে পৌঁছে দেওয়া এই অক্ষর-বন্ধনের এক প্রধান উদ্দেশ্য।
গঙ্গার পশ্চিম তীরবর্তী রাঢ় অঞ্চলের লোক-ইতিহাস, লোক-সংস্কৃতি, লোক-ভাষা, গাছপালা, দেবদেবীর কথা, বার-ব্রত, পাল-পাবর্ণ, জনপদ বৃত্তান্ত ইত্যাদি নিয়ে বিশিষ্ট গবেষক এবং ক্ষেত্র সমীক্ষক স্বপনকুমার ঠাকুর-র মোট ২২টি লেখার সংকলন গ্রন্থ ‘রাঢ় পাঞ্চালিকা’। পাঁচটি বিভাগে লেখাগুলি বিন্যস্ত হয়েছে।
যেমনঃ রাঢ় পাঞ্চালিকা, বৃক্ষপুরাণ, ব্রাত্য মঙ্গল, পা-চালির কথকতা এবং দেবখণ্ড। প্রতিটি লেখায় জড়িয়ে আছে শিকড়-বাকড়ের গন্ধ… মা-মাটি-মানুষকে নিয়ে পা-চালির মায়াবি কথকতা।
অত্যন্ত যত্ন নিয়ে সম্পাদনা করেছেন পার্থ কর। FREE DELIVERY
Reviews
Clear filtersThere are no reviews yet.